শনিবার রাতে ১২ দিনের স্পেন এবং দুবাইয়ের যাত্রা সেরে ফিরেছেন মুখ্যমন্ত্রী। যাত্রার দিনই রাজ্যপাল খোঁজখবর নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এখনো অবধি চিঠির বিষয় ধোঁয়াশা, তবে কিছু না জানা গেলেও রাজভবন সূত্রে খবর রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বিদেশ যাত্রার বিষয় খোঁজখবর নিতে চিঠি দিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। রাজ্যপালের এই চিঠি পাঠানোর বিষয়টি মানুষের মনে ধোঁয়াশা এনে দিয়েছে।
রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে নবান্ন-রাজভবন টানাপড়েনের মাঝে এই চিঠিকে রাজ্যপালের তরফে থেকে ‘সৌজন্যের বার্তা’ বলে মনে করছেন অনেকেই।
সদ্য উত্তরবঙ্গ, নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ম্যাকাউট), কলকাতা, কল্যাণী, বর্ধমান, কাজী নজরুল, ডায়মন্ড হারবার মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়-সহ রাজ্যের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেন রাজ্যপাল, যিনি পদাধিকার হলেও উপাচার্য, তবে উপাচার্যদের বেতন বন্ধ করে দেয়া হয় কারণ, আচার্য সেখানে রাজ্যপালের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য।
এদিকে সুপ্রিম কোর্ট রায় জানায়, রাজ্য,রাজ্যপাল এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) - এই তিন পক্ষকে নিয়ে সার্চ বা অনুসন্ধান সমিতি গঠন করতে হবে। শুধু উপাচার্য নিয়োগ নিয়েই নয়, ধূপগুড়ির নবনির্বাচিত তৃণমূল বিধায়ক নির্মলচন্দ্র রায়ের ঐকান্তিক অনুরোধ অনুষ্ঠান নিয়েও রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতের আবহ তৈরি হয়েছে। আবারও রাজ্যপালের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তবে এই সমালোচনায় ফলে বহুবার অনেক রকম বার্তা উঠে এসেছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিদেশ যাওয়ার আগে রাজ্যপাল শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী বিদেশ ভ্রমণ করতে যাচ্ছেন এবং বলেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রীর উপরে এই বিদেশ সফরকালে যেন অতিরিক্ত কাজের ভার না দেওয়া হয়।
তার আগে অবশ্য মাঝে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে দু’টি ‘গোপন’ চিঠি পাঠায় রাজ্যপাল। চিঠির বিষয়টি স্বীকার করলেও, চিঠির বিস্তারিত বক্তব্য সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী কিংবা রাজ্যপাল কেউই মুখ খোলেননি এখনও।
'রাজভবন অরাজনৈতিক থাকা উচিত এবং সেটাই যেন থাকে,' গত শুক্রবার জানিয়েছিলেন রাজ্যপাল। এই চিঠির বিষয় নিয়ে অনেক জল্পনা কল্পনা শুরু হয়েছে।
এবার কি নবান্ন আর রাজভবনের দূরত্ব কমে যাবে কি! তবে এছাড়াও একাধিক ভাবে রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষাৎ হতে পারে যেকোনো অনুষ্ঠানে। প্রত্যেক বছরের মতোই এ বছরও রেড রোডের কার্নিভালে ঢাকা হবে রাজ্যপালকে।
তবে এখনও এই চিঠির বিষয়টি নিয়ে মানুষের মনে ধোঁয়াশা রয়েছে। রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রী দুজনেই ঘটনার পরে পরস্পরের মুখোমুখি হয়নি। কিন্তু এই চিঠির চর্চাটা ক্রমশ বেড়েই চলেছে।
চিঠির মধ্যে কী এমন লিখেছেন রাজ্যপাল? নাকি মুখ্যমন্ত্রীকে অন্য কোনো বার্তা দিতে চান রাজ্যপাল? এই প্রশ্ন উঠে আসছে মানুষের মনে।
Comments