লিখছেন সুমিত দাশ
২৩ অগাস্ট। রোজকার ছবি আঁকার অভ্যাসে বসেছিলেন সাদা পাতা নিয়ে। আহা, মাতৃভূমির বিজ্ঞানীদের চাঁদ ছোঁয়ার আনন্দে ত্রিবর্ণ চাঁদে ছুঁড়লেন স্বভাব চিত্রকর। এ যেন, আপামর ভারতের উচ্চাস! আনন্দের জয়চিহ্ন এঁকে দিলেন চিত্রকর!
কৃষ্ণজিৎ সেনগুপ্ত, বাড়ি মুর্শিদাবাদের বহরমপুর। বছর উনপঞ্চাশের মানুষটি সে অর্থে ছবি আঁকার কোনও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা পাননি। মা বলতেন, আড়াই বছর বয়স থেকে ছবি আঁকছেন ছেলেটা! স্কিল ও কল্পনা এতটাই কনফিডেন্ট করলো, ৯৬ সাল থেকে স্বভাব চিত্রকর হলেন পেশাদার আঁকিয়ে।
বহরমপুর কমার্স কলেজের একদা ছাত্র কৃষ্ণজিৎ সেনগুপ্ত রোজই ছবি আঁকেন। জগতের সঙ্গে, চারপাশের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম তাঁর ছবি।
তথাকথিত কোনও রাজনৈতিক দল ও মতের সঙ্গে থাকেননি কখনও। আজও থাকতে চান না। তবে, সময় ও সমাজের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁর নিরলস কথা বলার অস্ত্র তাঁর রংতুলি।
ভারতের চন্দ্র-অভিযান আপ্লুত যেমন করেছিল, চাঁদে হিন্দুরাষ্ট্র ঘোষণার দাবি কেউকেউ তোলার পর, - বিরক্ত কৃষ্ণজিৎ। বললেন, চাঁদ সবার। বিজ্ঞানের অসীম অনন্তকে কয় করা বিজ্ঞানীদের সাফল্যকে গ্রাস করে দখল নিতে চাইছে অন্ধবিশ্বাসের ব্যাপারীরা। সরল ও বিশ্বাসী মনের শিক্ষা, যুক্তি ও শিল্পকলা শেখানোর সেরা সময়ে অন্ধবিশ্বাস দিয়ে তাকে দখল করা হচ্ছে। চিত্র করের মতে, - 'এ বড় অন্যায়!'
কৃষ্ণজিতের 'হিন্দুচাঁদ' ছবিটি নিয়ে সাহিত্যিক কিন্নর রায় বলেছেন, 'শক্তিশালী ইন্টারপ্রিটেশন।' তাঁর মতে, কৃষ্ণজিৎ আসলে রসিকতা, যুক্তিবোধ ও তির্যক চিন্তা দিয়ে - অনেক গভীর কথা সহজে বলেন। একজন কার্টুনিস্ট এমনই হন।
কৃষ্ণজিৎ নিজে অবশ্য কথা কম বলেন, ছবি আঁকেন বেশি। প্রতিদিন সময়ের সঙ্গে কথা বলে তাঁর সৃষ্টি।
Comments