শিক্ষক অভিভাবকসম। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষকরাও অসহায়। ছাত্রদের উপর রাগ প্রকাশ করলে রয়েছে আইনের ভয়। তার উপর এখন অভিভাবকরাও চড়াও হচ্ছেন শিক্ষকদের উপর। ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কটিও এখন যথেষ্ট চাপের মুখে।
উলুবেরিয়ার শ্যামপুর নাওদা নয়নচন্দ্র বিদ্যাপীঠের ইংরাজির শিক্ষক প্রসেনজিৎ বিশ্বাস। সোমবার দশম শ্রেনী ‘ক’ বিভাগে ইংরাজির ক্লাস নেওয়ার সময় একটি ছাত্রকে অমনোযোগী দেখেন তিনি। স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানাচ্ছেন, ইংরেজি স্যার সেই ছাত্রটিকে বকেন। বকবার পরেই ছাত্রটি তার মামার বাড়িতে অভিযোগ জানায় যে শিক্ষকের মারের চোটে তার কান দিয়ে রক্ত পড়ছে। ছাত্রটি মামার বাড়িতেই থাকে।
ক্লাসের অন্য ছাত্রদের থেকে জানা যাচ্ছে, যে ইংরেজি স্যার ওই ছাত্রটিকে কান ধরে ওঠবস করতে বলেছিলেন। কিন্তু খবর পেয়ে ছাত্রটির মামার বাড়ি থেকে এক দঙ্গল গুণ্ডা এনে স্কুলের টিচার্স রুমে ঢুকে কারোকে কিছু বুঝতে দেওয়ার আগেই প্রসেনজিৎবাবুকে পাকড়াও করে কিল, চড়, ঘুষি মারতে থাকে।
এমন ঘটনা যে ঘটতে পারে তা কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছেন না প্রসেনজিৎবাবু।
ছাত্রটির সহপাঠীর জবানিতে, “গ্রামারের ক্লাস নিচ্ছিলেন স্যর। বেশ কয়েকটা প্রশ্ন-উত্তর লেখান। কিন্তু ওই ছেলেটা ২টো মাত্র লিখেছিল। এরপরই স্যর ওকে কান ধরে ওঠবস করতে বলেন। কিন্তু ও স্যরের কথা শুনছিল না। এরপর স্যর ওর কানটা ধরে টানে। ও যদি প্রথমে ওঠবস করত, তাহলে কিন্তু স্যর মারতেন না। আমাদের সামনেই সবটা হয়েছে। একেবারেই ওর কান থেকে রক্ত বেরোয়নি। স্যরকে খারাপভাবে মারল। একেবারে মিথ্যা কথা বলে মারা হল স্যরকে।”
স্কুলে অযাতিতভাবে চড়াও হয়ে সরাসরি টিচার্স রুমে ঢুকে শিক্ষককে প্রহার করবার মতো গুরুতর বিষয় নিয়ে পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতেই হয়। মারকুতে দুই অভিভাবককে গ্রেফতারকরে পুলিশ। জানা যাচ্ছে, দুজন বীরপুঙ্গব এখন পলাতক।
ঘটনাটিকে যদি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে ধরেও নেওয়া হয়, তবু বলা উচিৎ যে এমন প্রবণতা শুধু ছাত্রদেরই ক্ষতি করবে সবচেয়ে বেশি।
Kommentare