top of page

পুরনো ছবির ‘কপি’ বলে ‘জওয়ান’ নিয়ে ট্রোল করে হালে কূল পাবে না ক্ষমতাসীনেরা

শাহরুখ খান প্রযোজিত এবং অভিনীত অ্যাটলি কুমারের ‘জওয়ান’ ছবিটি এখন ভারতীয় উপমহাদেশের দর্শকদের মুখে মুখে। গত তিনদিনের দর্শক সমাগমে খুশি দর্শকেরা। ভারতীয় চলচ্চিত্রের জনপ্রিয়তা যে এখনও ওটিটি-র দাপটে কমেনি, তা এর আগে ‘পাঠান’ প্রমাণ করেছে, এইবারে ‘জওয়ান’।


দক্ষিণের অভিনেতা রজনীকান্ত অভিনীত কোনো ছবি মুক্তি পেলে তাঁর ভক্তদের মধ্যে যে উন্মাদনা দীর্ঘদিন শিরোনামে এসেছে, ঠিক সেইভাবেই শাহরুখ খান হয়ে উঠেছেন এখনকার সিনেমা আইকন।


কিন্তু ‘জওয়ান’ ছবিতে শাহরুখ খান যে শুধু অভিনয়ই করেছেন, তা সম্ভবত এই মুহূর্তে বলা যাবে না। কারণ, ছবির চরিত্রের মাধ্যমে তিনি সরাসরি কথা বলছেন তাঁর দর্শকদের সঙ্গে। এবং যে কথাগুলি বলছেন, তা ক্ষমতাশালীদের অনেকেরই পছন্দ হচ্ছে না, হবেও না। হয়তো সেই কারণেই কথাগুলো অনেকের হজম হচ্ছে না।


সত্যি কথা বলতে কি, বিজেপি-র সেই কুখ্যাত আইটি সেল যদি গত বছরে মতো ২০২৩ সালেও ততটাই সক্রিয় থাকতো, তাহলে শাহরুখ খানের বিরুদ্ধে ট্রোলে ট্রোলে ছয়লাপ হয়ে যেতো সোশ্যাল মিডিয়া। কারণ, ছবিটিতে শাহরুখ খান ভোটদাতাদের উদ্দেশ্যেই বলেছেন, বাজারে জিনিস কিনতে গেলে যেভাবে আমরা সবকিছু পরখ করে নিই, তাহলে ভোট দিতে যাওয়ার সময় কেন প্রার্থীদের পরখ করে নেবো না?


শাহরুখ খানের মুখ থেকে এই কথাটি দর্শক সমাজ কেমন করে গ্রহণ করবে তা সময়ই বলবে। কিন্তু আপাতত, কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে ছবিটার বিরুদ্ধে কথা বলবার জন্যে প্রচার করা হচ্ছে যে ‘জওয়ান’ কোনো মৌলিক গল্পের চিত্ররূপ নয়। শাহরুখ খানের কথা ঠিক জায়গাতেই আঘাত করেছে। কিন্তু ভিমরুলের চাকে ঢিল পড়লেও ভিমরুলদের আটকে রাখা হয়েছে।


তার একটা কারণ, জি-২০ সম্মেলন চলাকালীন দেশে অরাজকতা সৃষ্টি হলে তা দেশের চেয়েও দেশের প্রধানমন্ত্রী তথা সম্মেলনের সভাপতি নরেন্দ্র মোদীর গায়েই নতুন করে কাদা ছিটোবে। এবং দ্বিতীয়ত, বিজেপি-র অন্দরেও শাহরুখ খানের কথাটির সত্যতা গোপনে স্বীকার করে নেওয়া হচ্ছে।


টুকলি করে ছবি বানাবার অভিযোগ অ্যাটলি কুমার কেন, দেশের বহু নামী-দামী চিত্রনির্মাতাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কারণ, জনপ্রিয় ছবির টেমপ্লেট বা ছাঁচগুলিকে অগ্রাহ্য করবেই বা কেন লাভের জন্যে উন্মুখ চিত্রনির্মাতারা?


যেমন, ‘জওয়ান’ ছবিটির ক্ষেত্রে বলা যায় কে ভাগ্যরাজ নির্মিত পরিচালিত কমল হাসান অভিনীত তামিল ছবি ‘অরু কয়েধিইন ডায়রি’ (১৯৮৫) এবং অমিতাভ বচ্চন অভিনীত ‘আখরি রাস্তা’ (১৯৮৬); দুটি ছবিই যথেষ্ট জনপ্রিয় যেখানে বাবা এবং ছেলেকে সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ হতে দেখা যায়।


বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে নতুন কিছু বলবার জন্যে অ্যাটলি কুমার এবং শাহরুখ খান যদি জনপ্রিয় ছবিটির ছাঁচটি অনুসরণ করেন, তাহলে তাঁদের সমালোচনা করে সৃজনাত্মক কোনো বিতর্ক অপ্রাসঙ্গিক। কারণ, সাধারণ মানুষকে নেতৃস্থানীয়রা যতটা বোকা বলে ভাবেন, তাঁরা ঠিক অতটা বুদ্ধিহীন নয়।



Comments


bottom of page