কসবার ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষ সহ আরও তিন শিক্ষককের দিকে আঙুল তুলেছিল মৃত ছাত্রের পরিবার। দশম শ্রেণির ওই ছাত্রকে 'পিটিয়ে খুন' করার দাবি করেন তার বাবা। সেই অভিযোগের তদন্ত করতে এদিন স্কুল চত্বরে যায় একটি ফরেনসিক দল। পুলিশ সূত্রের খবর, খুনের কোনোও প্রমাণ পায়নি ফরেনসিক দল। বরং রিপোর্টে আত্মহত্যারই ইঙ্গিত মিলেছে। তবে পুলিশ আরও জানতে পেরেছে সোমবার ঘটনা ঘটার আগের মুহূর্তে ছাত্রের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় এক শিক্ষিকার।
সোমবার কসবা রথতলার এক বেসরকারি স্কুলের দশমশ্রেণীর ছাত্র শেখ শানের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করা হয় স্কুল বাড়ির নীচ থেকে। এরপরই মৃত ছাত্রের বাবা স্কুলের প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং আরও দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশকে তিনি জানান, শানকে মারধর করেছেন স্কুলের শিক্ষকেরা। তাতেই মৃত্যু হয়েছে তার ছেলের। বছরখানেক আগে নাকি স্কুল কর্তৃপক্ষ তাঁকে হুমকি দিয়েছিল বলে দাবি মৃত ছাত্রের বাবার।
এই অভিযোগের ভিত্তিতেই কসবার ওই স্কুলের চার শিক্ষকের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৩০২ এবং ধারা ১২০বি অনুযায়ী খুনের মামলা রুজু করা হয়। প্রসঙ্গত, স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সাফ জানান, ‘‘তদন্ত চলছে। কোনও স্কুলই তাদের পড়ুয়াকে ‘চিহ্নিত’ করে না। হেনস্থাও করে না।’’
তদন্তে আরও উঠে আসে, এফআইআর দায়ের হওয়ার আগে সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ স্কুলের প্রিন্সিপাল একটি মেল পাঠান কসবার ওসিকে। তাতে জানানো হয়, "একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটেছে। ছাত্র-ছাত্রীদের অঙ্কের প্রজেক্ট দেওয়া হয়েছিল। সোমবার সেই প্রজেক্ট জমা দেওয়ার শেষদিন ছিল। শেখ শান নামের এক ছাত্র প্রজেক্ট জমা না দেওয়ায় তার বাবাকে বিষয়টি জানানোর কথা বলেন তাঁর বিষয় শিক্ষিকা। কিন্তু ওই ছাত্রটি পাল্টা ওই শিক্ষিকার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। এরপর শিক্ষিকা তাকে স্টাফ রুমে ডেকে বাইরে অপেক্ষা করতে বলে ভিতরে ঢোকেন। ২ মিনিট পরে তাকে ক্লাসে চলে যেতে বলেন।" তারপরই মারণ ঝাঁপ।
পুলিশ সূত্রের জানা গিয়েছে, ইতিপূর্বে স্কুলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ যাচাই করে দেখা হয়েছে। ছাত্রটিকে শেষবারের মত ছ’তলার করিডোরে দেখা যায়। স্কুলের এই অংশটি সংস্কারের কাজ চলছিল। তারপরই ঘটে এই মর্মান্তিক ঘটনা।
Yorumlar