চন্দ্রযান ৩-এর টাচডাউন পয়েন্টের নাম শিবশক্তি রেখেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। বিজ্ঞানমনস্কতার প্রশ্ন তুলে এই নামকরণ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে কোথাও কোথাও। একইসঙ্গে এই সমালোচনাকে 'হিন্দুত্ব বিরোধী' তকমা দিতে শুরু করেছে বিজেপি।
সিনিয়ার কংগ্রেস নেতা রশিদ আলভি বলেন, - অযৌক্তিক ভাবে চন্দ্রযান ৩-এর টাচডাউন পয়েন্টের নাম শিবশক্তি রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মিডিয়াকে তিনি বলেন, চাঁদ বা টাচডাউন পয়েন্ট এই জগতের সম্পদ, স্রেফ ভারতের নয়। ভারত চাঁদের মালিক নয়।
এদিকে বিদেশ সফর সেরে শনিবার ব্যাঙ্গালুরুতে যান মোদি। ইসরোয় গিয়ে বিজ্ঞানীদের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি বলেন, চন্দ্রযান ২- এর টাচডাউন পয়েন্ট 'তিরঙ্গা' নামে পরিচিত হবে। প্রসঙ্গত, মহাকাশ অনুসন্ধানের তাৎপর্য ও ভারতের কৃতিত্বের স্বীকৃতির জন্য ২৩ আগস্ট জাতীয় মহাকাশ দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন তিনি।
এদিকে, এক প্রশ্নের উত্তরে রশিদ আলভি বলেন, ২০০৮ সালে চন্দ্রযান ১-এর ভেঙে পড়ার স্হানটির নাম 'জওহর পয়েন্ট' রাখা যুক্তিযুক্ত কারণ, স্বাধীন ভারতের বিজ্ঞান ও মহাকাশ গবেষণার পরিকাঠামো নির্মাণে নেতৃত্ব দেন প্রথম প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, নামকরণ নিয়ে রাজনীতি করছেন নরেন্দ্র মোদি। আলভির বক্তব্যের পাল্টা বিজেপির সংখ্যালঘু মুখপাত্র শাহজাদ পাুনাওয়ালা বলেন, - কংগ্রেসের অবস্হান হিন্দু-বিরোধী। তার পাল্টা দাবি, - 'শিবশক্তি ও তিরঙ্গা' নাম দুটি ভারতের সঙ্গে জড়িত। ঘুরিয়ে বিজেপির দাবি, চন্দ্রযান ২ ও ৩ কংগ্রেস চাঁদে পাঠালে 'ইন্দিরা পয়েন্ট বা রাজীব পয়েন্ট' নাম দিত।
'শিবশক্তি' নামকরণ বিতর্ক আগামীতে যে বাড়বে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ওয়াকিবহাল মহলের কারো কারো দাবি, বিজ্ঞানমনস্কতা ও বিজ্ঞানশিক্ষা বিরোধীদের মধ্যেকার এই বিতর্ক লোকসভা ভোট আসতে আসতে আরও বৃহত্তর আকার নেবে। কারণ, হিন্দুর মতই, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন ও বহু আদিবাসী বা লোকধর্মের মত মুসলমান-খ্রিস্টানদের সহাবস্হানের দেশ ভারত। আর বিজ্ঞান আসলে সারা পৃথিবীর বিষয়, নামকরণে তাই উঁকি দিচ্ছে ক্ষুদ্র স্বার্থ। কারণ, সামনেই লোকসভা ভোট। একই সঙ্গে আধুনিক শিক্ষাবিরোধী পরিচিতি বদলে ফেলতে তৎপর বিজেপি।
Comments