চলতি বছরের শেষে পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোট। তারপর চব্বিশে লোকসভা। তার আগেই নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে ভারতের নেতৃত্বে আরও একটি জি-২০ সম্মেলন করার প্রস্তাব দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ওয়াকিবহল মহলের একাংশের দাবি, বৈঠকের শেষ বেলায় প্রস্তাবের আকারে কার্যত ঘোষণাই করলেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিন জি-২০'র বহুপাক্ষিক বৈঠক শেষে ব্রাজ়িলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভার হাতে দায়িত্ব ভারের প্রতীক কাঠের হাতুড়ি তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। উপস্থিত উনিশ জন রাষ্ট্রনেতার মোদি বলেন,“আপনারা সকলেই জানেন, নভেম্বর পর্যন্ত জি-২০ সভাপতিত্বের দায়িত্ব ভারতের হাতে রয়েছে। এখনও আড়াই মাস বাকি। এই দু’দিনে আপনারা সবাই অনেক বক্তব্য তুলে ধরেছেন, পরামর্শ দিয়েছেন, অনেক প্রস্তাব রেখেছেন। আমাদের অগ্রগতি কী ভাবে ত্বরান্বিত করা যায়, তা দেখার জন্য যে পরামর্শগুলি এসেছে, তা পর্যালোচনা করার দায়িত্ব আমাদের। আমি প্রস্তাব রাখছি যে, আমরা নভেম্বরের শেষে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের আরেকটি ভার্চুয়াল অধিবেশন করব। সেই অধিবেশনে আমরা এই শীর্ষ সম্মেলনের সময় গৃহীত সিদ্ধান্তগুলি পর্যালোচনা করতে পারি। আমাদের টিম এই পর্যালোচনাগুলি বিস্তারিত ভাবে আপনাদের সবার সঙ্গে ভাগ করে নেবে। আশা করি আপনারা সবাই এর সঙ্গে যুক্ত হবেন।”
প্রধানমন্ত্রীর এই পদক্ষেপ জি২০-র ক্ষেত্রে একান্তই বিরল। একই দেশের সভাপতিত্বে দু'মাসের মধ্যে পর পর দু’টি শীর্ষ পর্যায়ের জি২০ অধিবেশনের নজির ইতিহাসে নেই। অন্যদিকে, জি২০-র সাফল্যকে তুলে ধরতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তাঁর সমাজমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)-এ লিখেছেন, ‘‘জি২০-র ঐতিহাসিক সাফল্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজিকে অভিনন্দন। নয়াদিল্লির ঘোষণাপত্র গ্রহণ করাই হোক বা আফ্রিকান ইউনিয়নকে অন্তর্ভুক্ত করা, এই শীর্ষ সম্মেলন সমস্ত ভূ-রাজনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে একটি সেতু তৈরি করেছে।
মোদীজির দর্শন, ‘এক বিশ্ব এক পরিবার এক ভবিষ্যতের’ জন্যই তা সম্ভব হয়েছে। আমাদের দেশের প্রত্যেকে, যাঁরা আমাদের সাংস্কৃতিক মূল্যে বিশ্বাস করেন এই সম্মেলন তাঁদের সবাইকে জয় এনে দিয়েছে। এই সম্মেলন, বিশ্বকে আরও বাসযোগ্য করার পথে সবাইকে একজোট করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখল।’’
এই প্রসঙ্গে, বিজেপির আরেক শীর্ষ নেতৃত্ব সভাপতি জে পি নড্ডা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন,‘‘ভারতের জি-২০ সভাপতিত্বের বিপুল জয় হল। প্রধানমন্ত্রী মোদীজির নেতৃত্বে ভারত অনুন্নত ও গরিব দেশগুলির স্বর হয়ে উঠল। এই ভূ-কৌশলগত সংঘাতের সময়েও দেখিয়ে দিল যে, দেশগুলি আরও ভাল ভবিষ্যতের জন্য সহযোগিতা করতে পারে। এই সাফল্য ভারতের কূটনীতির এক স্মরণীয় মুহূর্ত তৈরি করল, যা প্রত্যেক ভারতবাসীর হৃদয়কে গর্বে ভরিয়ে দিয়েছে।’’
বিজেপি নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার বক্তব্য, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজির সম্মিলিত নেতৃত্বে, আন্তর্জাতিক নেতাদের সমর্থনে এবং বসুধৈব কুটুম্বকম-এর অন্তর্লীন অর্থে পারস্পরিক বিশ্বাস এবং নতুন অংশিদারিত্ব তৈরি হল। এই জি২০-কে মনে রাখতে হবে ভারত এবং সমস্ত দক্ষিণ বিন্দুর দেশগুলিকে আন্তর্জাতিক বদলের প্রধান কান্ডারি হয়ে ওঠার কারণেও।’’
Comments