মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুপারিশে নয়া চাকরিতে যোগ দিতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন তিনি। কিন্তু পুলিশি তৎপরতায় শেষে বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালের নতুন কাজে যোগ দিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের মৃত সেই পড়ুয়ার মা।
আজ বিকেলে, জেলা স্বাস্থ্য দফতরে গিয়ে কাজে যোগ দিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘‘ছেলের নামে হাসপাতালের নামকরণ না হলে কাজে যোগ দেব কি না, ভেবে দেখব।’’
এদিন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন মৃত পড়ুয়ার পরিবার। মৃতের বাবার অভিযোগ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের 'উস্কানিতে' হেনস্থা করা হয়েছে তাঁদের পরিবারকে। তাঁর বক্তব্য,‘‘ওঁর উস্কানিতেই স্থানীয় কিছু সুবিধাবাদী লোক আমাদের ছেলের নামে হাসপাতালের নামকরণ করতে দিচ্ছে না।’’
ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বীরেন মজুমদার অবশ্য পাল্টা বলেন,‘‘ওঁরা এই ধরনের অভিযোগ করতে পারেন বলে বিশ্বাস করি না। তবে যদি করেও থাকেন, তার কোনও সারবত্তা নেই।’’
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা নাগাদ সশস্ত্র পুলিশের নিরাপত্তায় বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালে পৌঁছন মৃতের মা। সেখানেই আনুষ্ঠানিক ভাবে বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালে ‘অ্যাটেনডেন্ট’ পদে যোগ দেন তিনি।
নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করে বাড়ি ফেরার সময় তিনি জানান,‘‘ছেলের নামে হাসপাতাল না হলে কাজে যোগ দিয়ে কী করব? নিজেকে কী বলে সান্ত্বনা দেব? মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেও এত বড় ঔদ্ধত্য ভাবতেই পারছি না!’’
উল্লেখ্য, দিনকয়েক আগে বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালের নাম বদলে ‘স্বপ্নদীপ গ্রামীণ হাসপাতাল’ করার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার আনুষ্ঠানিক ভাবে তার সব প্রস্তুতিও শেষ হয়েছিল। এদিন মৃতের মায়েরও ছেলের নামাঙ্কিত হাসপাতালে ‘অ্যাটেনডেন্ট’ পদে কাজে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। যথা সময়ে হাসপাতালে পৌঁছে ছিল গোটা পরিবার। কিন্তু তারপরই তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
শোকার্ত মায়ের চোখের সামনেই রীতিমত গোবর লেপে দেওয়া হয় ছেলের নামের উপর। সেই দৃশ্য দেখে জ্ঞান হারান মা। পরিবারের তরফে অভিযোগ মৃতের পরিবারকে ঘিরে অকথ্য গালিগালাজ করতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা।
পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে কোনো রকমে পরিস্থিতি সামাল দেয়। মৃতের মায়ের বক্তব্য,‘‘গতকালের কথা ভাবলেই আতঙ্কে আঁতকে উঠছি। ক’দিন আগে ছেলেকে হারিয়েছি। আমার সঙ্গে এ রকম করতে পারল?"
Comments