রাজ্যে ডেঙ্গির অন্যতম ‘হটস্পট’ হিসেবে প্রশাসনের উদ্বেগ বাড়িয়েছে নদিয়ার রানাঘাট। সেখানে এ বার ছড়াল স্ক্রাব টাইফাসের আতঙ্ক। স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত এক শিশুর চিকিৎসা চলছে রানাঘাটের বেসরকারি হাসপাতালে। ওই রোগেই আরও দুই শিশু আক্রান্ত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তারাও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রে খবর, নদিয়ার রানাঘাট মহাকুমার শান্তিপুর বহিরগাছি এলাকার নবম শ্রেণির পড়ুয়া রীতম চক্রবর্তী গত ২২ সেপ্টেম্বর পেটে ব্যথা এবং জ্বরের উপসর্গ নিয়ে এক চিকিৎসকের কাছে আসে। ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গি-সহ একাধিক পরীক্ষা করা হয় তার। কিন্তু জ্বরের কারণ জানা যায়নি। বেশ কিছু উপসর্গ দেখার পর চিকিৎসকেরা স্ক্রাব টাইফাস পরীক্ষার জন্য নমুনা পাঠান। তার পরেই নিশ্চিত হয়ে যায় বিষয়টি। শহরের অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রায় একই উপসর্গ নিয়ে দুই শিশু চিকিৎসাধীন রয়েছে। এই স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্তের খবর ছড়িয়ে পড়তেই জেলায় আতঙ্ক বাড়ছে।
স্ক্রাব টাইফাস শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ টাইফাস থেকে যার অর্থ হল ধোঁয়াটে বা অস্পষ্ট। এঁটুলি পোকার মতো দেখতে ট্রম্বিকিউলিড মাইটস বা টিক-এর মতো পরজীবী পোকার কামড় থেকে এই রোগের জীবাণু মানবদেহে ছড়ায়। এই পোকাগুলির আকার ০.২ মিলিমিটার থেকে ০.৪ মিলিমিটার পর্যন্ত হয়। সাধারণত গ্রামের কৃষিজমিতে এই ধরনের পোকা দেখা যায়। যদিও শহুরে এলাকায় বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্টে ছোট ঝোপঝাড়, গাছপালা কিংবা পোষ্যের গায়ে এই ধরনের পোকার দেখা হামেশাই মেলে। সাধারণত বর্ষায় এই রোগের প্রকোপ বাড়ে। প্রাথমিক ভাবে, এই পোকা কামড়ালে সঙ্গে সঙ্গে কোনও ব্যথা অনুভব হয় না। তবে পরে তা শরীরের ভিতরে গিয়ে সমস্যার সৃষ্টি করে। চিকিৎসা ঠিক মতো এবং ঠিক সময়ে না হলে প্রাণহানিরও আশঙ্কা থাকে।
রানাঘাটে আক্রান্ত কিশোরের চিকিৎসক জি সাউ বলেন, ‘‘সম্ভবত বাড়ির মুদিখানার দোকানের ইঁদুর কিংবা কোনও একটি জায়গা থেকে আক্রান্ত হতে পারে ছেলেটি। তার উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আক্রান্ত কিশোর এখন স্থিতিশীল।’’
Comments