হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্মী মিত্তাল অ্যান্ড ফ্যামিলি সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউট এবং ইউনিসেফ-এর গবেষণার দ্বারা দেখেছেন যে ভারতের কুম্ভ মেলা, একটি হিন্দু উৎসব। বিশ্বের বৃহত্তম ধর্মীয় সমাবেশের মধ্যে কুম্ভ মেলা একটি।
ভারতের চারটি শহরে সপ্তাহব্যাপী কুম্ভমেলা হয়। তীর্থযাত্রীরা,শহরগুলির তীরে নদীর জলে পবিত্র স্নান করেন। আমেরিকার গবেষকরা প্রায় ৭০,০০০ রোগীর কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছেন যারা ২০১৩ এবং ২০১৫ সালে এলাহাবাদ (যা এখন প্রয়াগরাজ নামে পরিচিত) এবং নাসিক শহরে অনুষ্ঠিত দুটি উৎসবের অংশগ্রহণকারীদের ভিড় ৮০টিরও বেশি ক্লিনিকে ছেয়ে গেছিল।
দুই উৎসবে প্রায় ১০০ মিলিয়নেরও বেশি তীর্থযাত্রী অংশ নেন। ২০১৩ সালে প্রয়াগরাজে, রোগীদের গড় বয়স ছিল ৪৬ বছর এবং তাদের বেশিরভাগই পুরুষ। তাদের সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে ছিল জ্বর, কাশি, সর্দি, পেশী ব্যথা এবং ডায়রিয়া।
এই দুই কুম্ভমেলায় হাজার হাজার তীর্থযাত্রী প্রাথমিকভাবে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ নিয়ে আসার কারণে তাদেরকে চিকিৎসকরা অতিরিক্ত পরিমাণে অ্যান্টিবায়োটিক প্রেসক্রাইব করেছেন।
ডাক্তাররা বলেছেন যত বেশি অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার "অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স" বিকাশের ঝুঁকি তত বেশি। অর্থাৎ যত বেশি অ্যান্টিবায়োটিক এর ব্যবহার করা হয় তত বেশি অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতিরোধী হয়ে ওঠে, মানে শরীরে ওষুধের কোন প্রভাব লক্ষ করা যায় না একেই বলা হয় 'সুপারবাগ সংক্রমণ' ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে যে এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি বড় "বৈশ্বিক হুমকি" তৈরি করেছে। দ্য ল্যানসেট, একটি মেডিকেল জার্নাল অনুসারে, এই ধরনের প্রতিরোধের কারণে 2019 সালে বিশ্বব্যাপী ১-২৭ মিলিয়ন মৃত্যুর কারণ হয়েছিল। ডব্লিউএইচও বলছে, ২০৫০সালের মধ্যে প্রতি বছর এই সংখ্যা আরো ১০ মিলিয়ন বাড়তে পারে।
অ্যান্টিবায়োটিকগুলি, যা গুরুতর সংক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষার প্রথম সারির হিসাবে বিবেচিত হয়, তা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এখানে কাজ করেনি। ভারতে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের হার সবচেয়ে বেশি। প্রতি বছর প্রায় ৬০,০০০ নবজাতকের মৃত্যুর জন্য শুধুমাত্র 'সুপার বাগ' সংক্রমণই দায়ী। গবেষকরা বলছেন, কোভিড-১৯ মহামারীর সময় অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার আরও বেড়ে গিয়েছিল।
Comments