রবিবার সকালে কেরালার একটি কনভেনশন সেন্টারে বিস্ফোরণের পর রাজধানী দিল্লি, নয়ডা, গ্রেটার নয়ডা, গাজিয়াবাদের গির্জা সহ; মেট্রো স্টেশনগুলির চারপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে। এক উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক জানালেন, রেলস্টেশন, মেট্রো স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড, প্রধান বাজার, গির্জা এবং অন্যান্য পাবলিক প্লেস গুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
কেরলে কালামাসেরিতে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের তদন্তে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ও এনআইএ-এর দল সিসিটিভি ফুটেজ থেকে কিছু প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। সিসিটিভি ফুটেজে একটি নীল গাড়ি দেখা গেছে, যা ভাবাচ্ছে এনআইএ পুলিশকেও৷ বিস্ফোরণের ঠিক আগে কনভেনশন সেন্টার থেকে বেরিয়ে যায় ওই নীল গাড়িটি। সন্দেহ করা হচ্ছে, এটাই সেই গাড়ি যেটিতে অভিযুক্তরা কনভেনশন ভেন্যুতে এসেছিলেন ।
লোকজন কনভেনশন সেন্টারে যেতে শুরু করার আগেই নীল রঙের গাড়িটি সেখানে দাঁড় করানো ছিল। কিন্তু গাড়িটি বিস্ফোরণের কিছুক্ষণ আগে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এই মুহূর্তে মামলার স্বার্থে পুলিশ গাড়ির আরও বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি। মামলার তদন্তে এই গাড়ির উপস্থিতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। সম্মেলনের কয়েকজন অংশগ্রহণকারীও জানান, তারা একটি ব্যাগ নিয়ে এক ব্যক্তিকে হলের চারপাশে হাঁটতে দেখেছেন।
কালামাসেরি কনভেনশন সেন্টারে এই ভয়াবহ বিস্ফোরণের জেরে কেরলজুড়ে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে ৷ সব গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশি টহল ও চেকিং-এর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সিনেমা-থিয়েটার, শপিং মল, বাস ও রেলওয়ে স্টেশন, বাজার, কনভেনশন সেন্টার, পর্যটন কেন্দ্র, উপাসনালয়-সহ যেই সকল স্থানগুলোতে সমাগম সবচেয়ে বেশি হয় এমন স্থানগুলিতে টহল জোরদার করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে । দুর্গতদের সাহায্য করার জন্য খোলা হয়েছে কন্ট্রোলরুম ৷
হরিয়ানা এবং উত্তরপ্রদেশ সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলিকে বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাইক পেট্রলিং, সাদা পোশাকের পুলিশ এবং পিসিআরদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। কোনো নতুন তথ্য পাওয়া গেলে তা গুরুত্ব দিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই উৎসব -এর মরসুমে জমজমাট বাজারগুলির ওপর কড়া নজর রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যেই সেই সব স্থানগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে। এই মুহূর্তে কোনো কিছুই উপেক্ষা করা যাবে না বলেও সাফ জানানো হয়েছে।
কেরলের এই ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায়, এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে। খবর মিলেছে, এখনও পর্যন্ত আহত হয়েছে ৫২ জন। এই ঘটনার পরই এনআইএ এবং এনএসজি তদন্তে নেমেছে। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির সঙ্গে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে।
সন্দেহজনক ব্যক্তিদের পাশাপাশি গাড়ির উপরও কড়া নজরদারি রাখা হচ্ছে। সতর্কতা বজায় রাখতে স্থানীয় গোয়েন্দাদেরও সক্রিয় করা হয়েছে। পুলিশ কর্তারা গির্জাতেও কড়া নজর রাখছেন। তারা সেখানে ফাদারদের সঙ্গেও কথা বলছেন, নিরাপত্তার আশ্বাসও দিয়েছেন। গৌতম বুদ্ধ নগর কমিশনারেটের সমস্ত ডেপুটি পুলিশ কমিশনার ইনচার্জদের সতর্ক থাকতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে, তাদের নিজেদের এলাকার গির্জাগুলিতেও বিশেষ নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে।
নয়ডার ডেপুটি পুলিশ কমিশনার হরিশ চন্দর বলেছেন, নয়ডার সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ গির্জা এবং অন্যান্য স্থানে যেখানে লোকেরা প্রার্থনা করতে যায় সেখানে পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বিশেষ করে সেক্টর ৬১, ৩৯, ২৯, ৫১, ১২৬, ১২, ৩৪ এবং নয়ডার অন্যান্য জায়গাতেও বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এবং অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার আধিকারিক-সহ থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকরা গির্জার ওপর নজরদারি চালাচ্ছেন।
コメント