top of page

কফি হাউসে ল্যাপটপ ব্যান! যাদবপুর-কাণ্ডের রেশ?

Updated: Sep 1, 2023

লিখেছেন নজরুল আহমেদ জমাদার


সম্প্রতি যাদবপুর কাণ্ডের রেশ ধরে নানান বিতর্ক সামনে আসছে। যাদবপুর কফি হাউস, দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম আড্ডার জায়গা। নানান বয়স ও প্রজন্মের মিলনক্ষেত্র বলা যায়। কফিতে চুমুক আর সামাজিক মেলবন্ধন, সঙ্গে নানান বিষয়ে আড্ডা। স্হানীয় বাসিন্দা, নানান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, প্রাক্তনী, প্রকাশক, গণ-আন্দোলনের মানুষজন, চিত্রপরিচালক, গানবাজনার লোকজন - সকলেই আসেন কফি হাউসে। এবার কর্তৃপক্ষের ঘোষনা, - ল্যাপটপ অন করা যাবে না কফি হাউসে৷ এই নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।



কফি হাউস নিছক কোনও রেস্টুরেন্ট নয়। বিশেষ করে কলকাতার কলেজ স্ট্রিট কফি হাউস ও যাদবপুর কফি হাউসের একটা দীর্ঘ সাংস্কৃতিক ইতিহাস আছে। সেই সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে বহু আলোকিত মানুষের ইতিহাস। সে বিষয়ে কোন গভীর আলোচনা করছি না। যে ঘটনা বলতে চাইছি তা হল হঠাৎ করেই যাদবপুর কফি হাউসে ল্যাপটপ নিয়ে কোনও কাজ করা যাবে না বলে কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। প্রথমেই বলতে চাই এটা অত্যন্ত অগণতান্ত্রিক বেআইনি, অনৈতিক, এবং অমানবিক। এই বিজ্ঞপ্তি বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই কফি হাউসে প্রতিনিয়ত আশা প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক বন্ধুবর্গ প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এটা নিয়ে গত দুদিন ধরে একটা বিতর্কও চলছে। প্রশ্ন হল ল্যাপটপ নিয়ে কফি হাউসে বসে যারা কাজ করেন তাদের অধিকাংশই গবেষক। যে কোনও কারণেই হোক তারা কফি হাউসকে তাদের উপযুক্ত পরিবেশ বলে মনে করেন। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য ল্যাপটপ নিয়ে কফি হাউসে কাজ করার ফলে তাদের ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে। এখানে কয়েকটা প্রশ্ন রাখতেই হয়।



প্রথমত,যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা কিন্তু কেউ এক বছর ধরে কফি হাউসে আসছেন না। তাদের কফি হাউসে আসার ইতিহাস ন্যূনতম দশ বছর। এমন তো নয় কফি হাউসে কিছু না খেয়ে তারা শুধু ঘন্টার পর ঘন্টা জায়গা দখল করে বসে আছেন! কর্তৃপক্ষের বোঝা উচিত এরাই তাদের রেগুলার কাস্টমার।


দ্বিতীয়ত, যতদূর শুনেছি কলেজ স্ট্রিট কফি হাউস এরকম কোন বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি। তাহলে আলাদা হবে যাদবপুর কফি হাউসে এই বিজ্ঞপ্তি কেন? তার মানে এর পিছনে কি আরও ভবিষ্যতের কোন ভয়ংকর পরিকল্পনা আছে? বিশেষ করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাগিং কে কেন্দ্র করে ঘটনার পর কফি হাউসের বিজ্ঞপ্তি আমাদের প্রত্যেককেই ভাবাচ্ছে। হয়তো এরপর বলবে কোনো বই নিয়ে পড়াশোনা করা যাবে না। সমাজ বিজ্ঞান রাজনীতি , অর্থনীতি বা শাসকের বিরুদ্ধে কোন আলোচনাই কফি হাউসে বসে করা যাবে না।

তৃতীয়ত, সাধারণ রেস্টুরেন্ট ক্যাফেগুলো-তেও ল্যাপটপ নিয়ে বসা যায়। বরং কর্তৃপক্ষ বলতে পারে যে, ভাই/ বোন তোমরা কোন খাবারের অর্ডার না দিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা টেবিল দখল করে বসে থাকো এটা ঠিক না। সেটা কেউ করে বলেও আমার মনে হয় না। তাহলে কর্তৃপক্ষ এটা নিয়ে নিশ্চয়ই আগে কোন পদক্ষেপ নিতেন। কিন্তু, তা না করে জেনারেল বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হচ্ছে ল্যাপটপ ব্যবহার করা যাবে না। এটা অত্যন্ত অন্যায়।


যাদবপুর কফি হাউসে প্রতিনিয়ত আশা প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক বন্ধুদের বলব কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। আশা করব গণতান্ত্রিক আলোচনার মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ তাদের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করবে।


(এ লেখার বক্তব্য ও মতামত লেখকের নিজস্ব)

Comments


bottom of page