সহকর্মীরা বলতেন জ্যান্ত কম্পিউটার। ৭০, ৮০ ও ৯০ দশকের রাজনীতির ও নানান আন্দোলনের দিনক্ষণ জানতে চাইলেই দেবশিস ভট্টাচার্য একাই এনসাইক্লোপিডিয়া। দিনভর নানান কাজের ফাঁকে বিভিন্ন সংবাদপত্র বা নিউজ চ্যানেলের সাংবাদিকরা নানান তথ্যের জন্য ফোন করতেন। অকৃপণ দেবাশিসবাবু তা জুটিয়ে দিতেন। তরুণদের আগলে রাখতেন। ইন্টারনেটে আসার আগে বাংলা সাংবাদিকতার সাবেকি ঘরানা আর নতুন সময়ের শেষ সেতু যে কয়েকজন, দেবাশিস ভট্টাচার্য তাদের একজন।
সর্বত্র ভিন্ন মতের প্রতি সম্মান হারিয়ে যাচ্ছে ক্রমশ। সাংবাদিক, রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ দ্রষ্টা দেবাশিসবাবু ছিলেন অন্য ধাতুর। বিপুল পড়াশুনো, একই সঙ্গে ছুঁটে বেড়ানো, দুই দিকেই সমান পারদর্শী ছিলেন। সার্বিকভাবে দেশ কাল সমাজ রাজনীতি নিয়ে এত ভাবুক সাংবাদিক কমই ছিলেন।
চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি মারা যান দেবাশিস ভট্টাচার্য। আর আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর প্রয়াণের পর তাঁর প্রথম জন্মদিন। পরের দিন কালীঘাট শ্মশানের সামে তাঁর আদি পাড়ায় বসছে আবক্ষমূর্তি।
অফিস ফেরতা দেবাশিস ভট্টাচার্যের আড্ডা ছিল ওখানে। চা-দোকানদার, ভ্যানচালক, পাড়ার সমবয়সী-অসমবয়সী, শ্মশানের বাসিন্দারা - কতকত লোক আড্ডায় জুড়ে যেতেন তা্র আড্ডায়। থাকতেন সাংবাদিক-রাজনীতি-গণআন্দোলন- সংস্কৃতির লোকজন - জুড়ে যেত নানান স্মৃতি।
কাছে একটা রাতের স্কুল ছিল। অফিস ফেরতা দেবাশিসদা প্রান্তিক ছেলেমেয়েদের পড়াতেও যেতেন। স্হানীয়রা দেবাশিসবাবুকে এখনও শ্মশানের সামনে রোজ চাইছেন। স্হানীয় রাসবিহারী অ্যাভেনিউ ও টালিগঞ্জ রোডের সংযোগা্হলে আবক্ষমূর্তি বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে - দেবাশিস ভট্টাচার্য স্মৃতি রক্ষা কমিটি।
Comments