ম্যানগ্রোভ কাটা বেআইনি । এই সহজ কথাটা সরকারি নিয়মের খাতার বড় অক্ষরে লেখা থাকলেও নজরদারি নেই। তাই সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় দিনে দুপুরে বেআইনি ভেবে কাঁটা হচ্চে ম্যানগ্রোভ। তৈরী হচ্চে মাছের ভেড়ি। পুরো কর্মকাণ্ডই বেআইনি তবু চলছে প্রশাসনের নাকের ডগায়। প্রশাসন সব জানে । তবুও চুপ। কিছু কিছু জায়গায় অভিযোগ রয়েছে যে এই বেআইনিভাবে ম্যানগ্রোভ কেটে মাছের ভেড়ি বানানোর কারবারের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে শাসক দলের 'দাদা-রা'। তবে তাঁরাও বোধহয় জানে না কিছু টাকার চক্করে কী ভয়ানক বিপদ তারা ডেকে আনছেন নিজেদের জীবনে!
ম্যানগ্রোভকে বলা হয় ন্যাচারাল ব্যারিয়ার বা প্রাকৃতিক বাঁধ। ঠিক যেমন মানুষ নদী বা সমূদ্র তীরে বোল্ডার, বালি, পাথর ফেলে বাঁধ তৈরী করে , তেমনই বিস্তীর্ণ সুন্দরবন এলাকায় সমুদ্রের হাত থেকে জমিতে বাঁচাতে প্রকৃতির বাঁধ এই ম্যানগ্রোভ। যার কাজ সমুদ্রের জলকে ডাঙায় ঢোকা থেকে আঁটকানো। এই বাঁধ না থাকলে সমুদ্রের জলের তোড়ে ভেসে যাবে সুন্দরবন ।
বেআইনি ভাবে ম্যানগ্রোভ কাটার দুটি সাইড এফেক্ট রয়েছে। এক, প্রাকৃতিক সম্পদ নষ্ঠ করা । আর দুই প্রাকৃতিক সমুদ্রবাঁধ নষ্ট করে। এর প্রভাব ইতিমধ্যেই পড়েছে সুন্দ্রবনে। ঘোড়ামার দ্বীপের খবর মিডিয়ায় খুব একটা দেখা যায় না। তবে দেখা যাওয়া প্রয়োজন। কারন গত দশ বছরে আয়তন কমেছে ঘোড়ামারার। সমুদ্রের কবলে চলে জাচ্ছে মাটি। দ্বীপ কমছে। সমূদ্র ঢুকে আসছে বাসভূমিতে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকটা বলছেন হয়তো আর এক থেকে দু দশক। তারপর আর মানচিত্রে দেখা যাবে না ঘোড়ামারাকে।
তবে সুন্দরবনে এই দ্বীপ হারিয়ে যাওয়া তো নতুন নয়। লোহাচূড়া দ্বীপও এভাবেই সমূদ্রে হারিয়ে গেছে। তখনও টনক নড়েন কারও। ঘোড়ামারার দ্রুতগতীতে হারিয়ে যাওয়ার পথে ছুটে যাওয়াতেও মানুষ নীরব। এছাড়াও মৌসুনি, জাম্বুদ্বীপ থেকে শুরু করে সমূদ্রেতবে অবস্থিত বহু এলাকাই কিন্তু রয়েছে সঙ্কটে। বাঁচানোর একটাই উপায়। ম্যানগ্রোভ বাঁচানো।
Comments