দূর্গা পুজো আর বাঙালি যেন একই মুদ্রার দুই পিঠ। এইবছর পুজো দেরিতে হলেও তার আক্ষেপ নাই। কারণ পুজোর থেকেও পুজো আসবে আসবে ভাব যেন আরো ভালো করে দেয়ে মন। সে দেশ হোক বা বিদেশ, পুজোর রঙে রঙিন হয় সবখানে।
তাই প্রায় চার বছর পরে পূজায় মন খুলে আনন্দ করতে পারার খুশি প্রকাশ করল হংকং বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন।
পুজোর বাকি প্রায় ২৪ দিন। তাই কোমর বেঁধে শুরু হয়ে গেছে হংকং-এর পুজোর তোড়জোড়। কোভিড পরিস্থিতি থাকার জন্য ২০১৯ পরে সেভাবে পূজায় আনন্দ করতে পারেনি হংকং এর বাঙালী বাসিন্দারা।
২০২০ তে কোভিডের লকডাউন থাকায় পুজো হয়নি। ২০২১-এ পুজো হলেও বিচ্ছিন্নভাবে পূজোর আয়োজন করতে হয়েছে।কোভিডের সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য এক এক দল করে যেতে হতো পূজো মণ্ডপে। ২০২২-এও মানতে হয়েছিল কিছু বাধা আর নিষেধ।
কিন্ত ২০২৪-এ অনাবিল আনন্দে পুজো করতে পেরে খুব খুশি হংকং বেঙ্গল অ্যাসোসিয়েশন। এই বছরের পয়লা মার্চ থেকে হংকং এর বাধ্যতামূলক মার্কস পড়ার নিয়ম উঠে গেছে। তাই পূজোতে আর কোন বাধা নেই।
এই বছরের পুজোর খুশিতে মাতোয়ারা হওয়ার আরেকটি কারণও রয়েছে হংকং-এর বাঙালিদের। এই বছর তাঁদের শারদোৎসবের রজতজয়ন্তী বর্ষ। ১৯৯৮ সাল থেকে হংকং-এর বাঙালিরা এই ক্লাবটি গঠন করে শুরু করেছিলেন দুর্গাপুজো।
এবারে তারা দুর্গাপূজা করবে একটি প্রাইভেট ক্লাবে মণ্ডপ বানিয়ে। ঠিক আগে যেমন হতো।ফলে পূজোতে ভিড় হলেও তাদের ভাবনার কোনো কারণ নেই। বরং আনন্দই অনেক বেশি।
শুধু বাঙালিরাই নয়, হংকং-এর বিভিন্ন ভারতীয় অধিবাসীরা এই পুজোতে যোগদান করে। তবে শুধু ভারতীয় বা কেন? চীন, ইউরোপের ফ্রান্স এবং বিভিন্ন দেশ থেকে হংকং-এ আসা অধিবাসীরাও এই পুজোর আনন্দে শরিক হন।
শুধু পুজো নয়, পূজোর সাথে নানা খেলার আয়োজনও থাকছে এবার। ছোটদের বসে আঁকো প্রতিযোগিতা, মহিলাদের শাঁক বাজানো, প্রদীপ জ্বালানো ইত্যাদি তো থাকছেই।
পুজোর ক'দিনের জন্য আসবে বিশেষ রাঁধুনি। ষষ্ঠী থেকে নবমী নিরামিষ খাওয়া হলেও দশমীতে কিন্তু থাকছে একটার পর একটা আমিষ খাবার।
তাছাড়াও কলকাতা থেকে পৌঁছাবেন ঢাকিরা। তাঁদের সঙ্গে যাবেন পুজোর পুরোহিতও। সেই প্রথম থেকেই শক্তিবাবু হংকং বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশনের এই পুজোর পৌরহিত্য করে আসছেন।
হংকং-এর অধিবাসী সব বাঙালিরা মিলে এই একটাই পুজো করে। তাই পূজোর কদিন তাঁদের সবার জন্যে দুর্গাপুজোটা এক মিলনোৎসবও বটে।
Comentarios