top of page

মুজফ্ফরনগর : চড় থেকে আলিঙ্গন! যোগী প্রশাসন নয়, শিশুমনে ঘৃণার বিষ মুছতে আসরে কৃষক নেতারাই

প্রধান শিক্ষিকা নিদান দিয়েছিলেন ধর্মের আগুনে পুড়ে যেতে হবে শৈশবকে। ৮ বছর বয়সের সহপাঠীদের মনেও বিদ্বেষ গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন । তবে পারলেন না মুজফ্ফরনগরে ওই প্রধাণ শিক্ষিকা। সব বিদ্বেষ পুড়ে ছাই হয়ে গেল আলিঙ্গনে। একদিকে সেই মুসলমান ছেলেটি যে শিক্ষিকা নিদানে সহপাঠীর কাছে মার খেয়েছিল। আর অন্যদিকে সেই হিন্দু ছেলেটি যে শিক্ষিকার আদেশে বাধ্য হয়েছিল সহপাঠীকে সপাটে চড় মারতে। সব ভুলে দুজন দুজনের আলিঙ্গনে। গলা জড়াজড়ি করে হাসি মুখে ভাব করছে দুই শিশু। এই দৃশ্যই বদলে দিল মুজ্জফরনগরের গরম, বিদ্বেষের রাজনীতির হাওয়াকে। হাওয়া বদলের নেপথ্যে যোগী প্রশাসন নয়, ছিল কৃষক নেতারা ।



৮ বছরের মুসলমান ছাত্রকে সহপাঠীদের মারতে নির্দেশ দিয়েছিলেন শিক্ষিকা, বৃহষ্পতিবারের এই ঘটনা জানাজানি হবার পর এবার পরিস্হিতি সামলাতে নামলেন কৃষি আন্দোলনের নেতৃত্ব। মুজফফরপুরের ঘটনার পর, কৃষক আন্দোলনের নেতারা গিয়েছিলেন ঐ ছাত্রদের কাছে, যার মধ্যে একজন হিন্দু ছাত্র তার সহপাঠীকে সবার সামনে চড় মেরেছে, তার শিক্ষিকার প্ররোচনায়।



কৃষক নেতারা, শনিবার দুটি ছাত্রকে বলে একে অন্যকে যাতে আলিঙ্গন করে। সেইমত জড়তা ভেঙে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে শিশুরা।


ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার। মুজ্জফরনগরের একটি স্কুলের ঘটনা শোরগোল ফেলে দেশে। সেই ভিডিও ঘুরতে থাকে হাতে হাতে। ভিডিওতে দেখা যায়- প্রধান শিক্ষিকার নির্দেশে একেএকে ক্লাসের এক মুসলমান শিশু পড়ুয়াকে চড় মারছে তারঅ সহ পাঠী হিন্দু ছাত্ররা। আর ক্যামেরায় রেকর্ড করতে করতে হাসছেন এক প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষকণ্ঠ।


শনিবার সকাল থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় মুজফ্ফরপুরের এই ভিডিও আসতেই শুরু হয় নিন্দার ঝড়। এর পরেই ময়দানে নামে ন্যাশানাল কমিশন ফর প্রোটেকশন অফ চাইল্ড রাইটস(এনসিপিআর)। মুজফফরপুরের পুলিশ সুপারকে অবিলম্বে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে এনসিপিআর। সঙ্গে অবিলম্বে এফআইআর দায়ের করতে বলেছে কমিশন।

শিশু সুরক্ষার আইন ২০১৯-এর ১৭ নম্বর ধারা ও জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্ট ২০১৫-এর ৭৫ নম্বর ধারা লঙ্ঘন হয়েছে বলে এনসিপিআর জানিয়েছে। জুভেনাইল জাস্টিস আইনের ৭৫ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, - শিশুকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করলে পাঁচ বছর পর্যন্ত জেল ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা অবধি হতে পারে।


এনসিপিআর আরও বলেছে, যেহেতু শিশুটি হয়রানির শিকার, ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যন্য শিশুদেরও সুরক্ষার প্রয়োজন। একই সঙ্গে ক্লাসের সমস্ত শিশুকে চাইল্ত ওয়েলফেয়ার কমিটির সামনে এনে কাউন্সেলিংয়ের নিদান দিয়েছে এনসিপিআর।


উত্তরপ্রদেশের এই ঘটনায়, মুজফফরপুরের জেলা শাসকের কাছে স্কুলটির বৈধতা সম্পর্কে জানতে চেয়েছে এনসিপিআর। স্কুলের শিশু ও শিক্ষকের সংখ্যা, শিক্ষকরা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কিনা, এনসিপিআর তা জেলা শাসকের কাছে জানতে চেয়েছে।জানা গেছে অভিযুক্ত শিক্ষিকার নাম ত্রিপ্তা ত্যাগী। বৃহস্পতিবার মুজফফরপুরের মনসুরপুর থানা এলকার খুব্বাপুরে লজ্জাজনক ঘটনাটি ঘটে।

תגובות


bottom of page