ডার্বিতে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে যে খেলাটা খেলেছিল ইস্টবেঙ্গল তার ৫ শতাংশও খেলতে পারল না ডুরান্ড কাপের সেমি ফাইনালে। ছ্ন্নছাড়া ফুটবল। ভুল পালের ছড়াছড়ি। পর পর তিনটে পাসে বল পায়ে রাখতে বার বার ব্যর্থ ইস্টবেঙ্গল। ডিফেন্স থেকে মাঝমাঠ থেকে ফরওয়ার্ড, তালমিলের অভাব ছিল চোখে পড়ার মত। তুলনায় কিছুটা হলেও ভালো খেলা দেখা গেল নর্থ ইস্টের। ০-২ এ পিছিয়ে থাকার পরেও নাওরেম ও নন্দকুমারের গোলে খেলা গড়াল টাইব্রেকারে। প্রভুসুখন গিলের গোলরক্ষণের কামালেই হারা ম্যাচ জিতে বেরিয়ে এল ইস্ট বেঙ্গল। বৃহস্পতিবার যদি মোহনবাগান জিতে যায় তাহলে রবিবারই হবে ডার্বি।
খেলার ১৫ মিনিটের মাথায় বার বার ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্স ভেঙে আক্রমণ নর্থ ইস্টের। পর পর সট । তবে গোল হয়নি কখনো। দেখলে মনে হয় ইস্টবেঙ্গলই বোধহয় ঘরের মাঠে নয়, বাইরের মাঠে খেলছে। এদিকে মাঝমাঠের দখল রাখতে দু দলই চেষ্টা করেছে প্রবল। সেখানে খানিকটা এগিয়ে ছিল উত্তর-পূর্বের দল। নিজেদের মধ্যে ছোট ছোট পাসে আক্রমণে উঠছিলেন মিগুয়েল জাবাকো, মনবীর সিংহেরা। উল্টো দিকে ইস্টবেঙ্গলের দুই প্রান্ত ধরে খুব বেশি আক্রমণ হচ্ছিল না। যে কয়েকটি আক্রমণ মন্দার রাও, নিশু কুমারেরা তুলে আনেন তা-ও নর্থইস্টের রক্ষণে আটকে যায়। মহেশ নাওরেম সিংহ এই ম্যাচে ডান প্রান্ত ধরে খেলছিলেন। যে কয়েকটি আক্রমণ হয় তাতে ভূমিকা ছিল নাওরেমের। বক্সের বাইরে থেকে লুকাস পারডোর জোরালো শট বাঁচিয়ে দেন নর্থইস্টের গোলরক্ষক মিচু মিরশাদ। এই মিরশাদ ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন গোলরক্ষক।
২২ মিনিটের মাথায় চমক দেখাল নর্থইস্ট। বাঁ প্রান্তে বক্সের বাইরে বল পান ফাল্গুনী। ফিতরে ঢুকে রক্ষণের উপর দিয়ে বক্সের ভিতরে বল ভাসিয়ে দেন তিনি। লাল-হলুদ ডিফেন্ডারকে ঘাড়ের কাছে নিয়ে হেডে গোল করেন জাবাকো। এগিয়ে যায় নর্থইস্ট। ফার্স্ট হাফে গোল সোধ করতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল।
তারপর ৫৬ মিনিটের মাথায় মাঝমাঠ থেকে লম্বা বল ধরে গোল করেন নর্থইস্টের ফাল্গুনী। ইস্টবেঙ্গলের গোটা রক্ষণ দাঁড়িয়ে দেখছিল। ২-০ গোলে এগিয়ে যায় নর্থইস্ট।৭৬ মিনিটের মাথায় এক গোল শোধ করে ইস্টবেঙ্গল। ক্লেইটন সিলভার ক্রস থেকে নাওরেমের শট নর্থইস্টের ডিফেন্ডার দীনেশ সিংহের পায়ে লেগে দিক পরিবর্তন করে গোলে ঢুকে যায়। গোল করার পর চাপ আরও বাড়ায় ইস্টবেঙ্গল।
টানা ৯০ মিনিট জঘন্য পাসের ধারাবাহিক নিদর্শন রাখল ইস্টবেঙ্গল। গোটা ম্যাচে চার থেকে পাঁচ বার তিনটি ভাল ঠিক পাস দিয়েছে তারা। তার পরেও খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। সংযুক্তি সময়ে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন নর্থইস্টের জাবাকো। সংযুক্তি সময়ে শেষ মুহূর্তে হেডে গোল করে সমতা ফেরান নন্দকুমার। খেলা গড়াত টাইব্রেকারে। সেখানেই কামাল দেখাল প্রভসুখন।
টাইব্রেকারে নায়ক ইস্টবেঙ্গলের গোলরক্ষক প্রভসুখন। নর্থইস্টের তৃতীয় শট বাঁচিয়ে দেন তিনি। শেষ শট নিতে যান নন্দকুমার। তিনি ঠান্ডা মাথায় গোল করে ইস্টবেঙ্গলকে ফাইনালে তোলেন। হারের মুখ থেকে ফাইনালে ওঠেন কার্লেস কুয়াদ্রাতের ছেলেরা।
コメント