বাঙালি শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোকে টেনে এনে বিজেপির বিরুদ্ধে ' বাঙালি বনাম বহিরাগত ' লড়াই আবারো সামনে নিয়ে এলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ইডি হানা দিয়েছিল রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বাড়িতে। এরপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক ডেকে আনেন, এবং সেখানে কড়া বার্তা দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ইডির এই তল্লাশিকে বাঙালির পুজোর উৎসবের সময় তিনি সংস্কৃতির উপর আঘাত হিসেবেই দেখছেন। আজ শুক্রবার পুজোর কার্নিভাল। জেলায় জেলায় পুজোর কার্নিভাল চলছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, পূজোর আগেও খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষের বাড়িতে তল্লাশি করেছিল ইডি। এরপর দ্বাদশীর দিন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বাড়িতে তল্লাশি ইডির। তিনি বলেছেন, বাঙালির প্রধান উৎসবের সময় এমন আচরণ কেন করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি?
তিনি আরও বলেন, "পূজোর কিছুদিন আগে কলকাতার মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে যান ইডি। বাড়িতে গিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। সেখানে ফিরহাদের স্ত্রীর পোশাকের হিসাবও তদন্তকারীরা নিয়েছে। পোশাকের ছবি তোলা হয়েছে। ঘিয়ের কৌটো উল্টে দিয়েছে! কী পরিমান অমানুষিক অত্যাচার চালাচ্ছে তা বলার মত নয়!" এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বাড়িতে ইডির তল্লাশি চলাকালীনই দলের কয়েকজনের নেতারা বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাতে পৌঁছে যান তার বাড়িতে। সেখানে তাদের ঢুকতে বাধা দেয় কেন্দ্রীয় বাহিনীরা। তৃণমূল নেতাদের মধ্যে একজন গেটের সামনে দাঁড়িয়ে অভিযোগ করেন, আমাদের ঐতিহ্য মেনে গুরুজনদের সঙ্গে বিজয়া করতে এসেছিলাম। কিন্তু আমাদের বাঙ্গালি সংস্কৃতিতে এরা আঘাত করছে। এদিকে অন্যান্য নেতারা ইডির এই তল্লাশির কথা জানতেন না। সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপির তরফে বাংলা এবং বাঙালির উপর সাংস্কৃতিক আক্রমণের অস্ত্র হিসেবে বিশ্বভারতী প্রসঙ্গ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে বিশ্বভারতীকে।
অস্ত্রের ওপর নতুন অস্ত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের । বিধানসভা নির্বাচনের সময় তৃণমূলের স্লোগান ছিল 'বাংলা নিজের মেয়েকে চাই।' তারই উল্টোদিকে বিজেপির গায়ে বারবার বহিরাগত তকমা লাগিয়েছে তৃণমূল। বিজেপির 'জয় শ্রীরাম' স্লোগানের পাল্টা 'জয় বাংলা' স্লোগান তৈরি করেছে তৃণমূল। এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার এই তল্লাশির প্রতিবাদকে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবের সঙ্গে মেশালেন বাঙালির আবেগ। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য, "বাঙালি সংস্কৃতিতে এই সময়টা অসুর দলনের বিজয় উৎসব পালনের সময়। বাংলার দুর্নীতি অসুর বিনাসের কাজকে বাঙালি স্বাগত জানাচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী কান পাতলেই তা শুনতে পাবেন।"
Comentarii