‘গভীরে যাও, শুধু গভীরে যাও, এই বুঝি তল পেলে, এই হারালে’- কিছুদিন আগে এই গানটি অনেককে গাইতে শোনা গেছে। আজ আবার প্রাথমিক শিক্ষক দুর্নীতির মামলায় সিবিআই-এর তদন্তের গতিপ্রকৃতি দেখে গানটির মুখরা মনে পড়তেই পারে।
অবশ্য, বিচারপতিকে সিবিআই কিশোর কুমারের একটি ছবির নাম বলেন – ‘হাম সব চোর হ্যায়’।
প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে সন্দেহজনক নেতাদের তালিকা দিয়ে আদালতে ছবির নামটি জানায় সিবিআই।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সেই তালিকায় চোখ বুলিয়ে মন্তব্য করেন, “এতো সব মহাপুরুষ দের নাম!”
সিবিআই- এর পক্ষ থেকে বিচারপতির এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো হয় যে প্রত্যেকেই যথেষ্ট প্রভাবশালী এবং জন প্রতিনিধি, বিধায়ক, কর্পোরেটর।
তা শুনে সিবিআই-এর কথা সমর্থন করে বলেন, “হ্যাঁ, প্রত্যেকেই দেখছি প্রভাবশালী। সিবিআই কে শক্ত হাতে, কড়া তদন্ত করতে হবে। পাখির পালকের ছোঁয়া দিয়ে তদন্ত চলবে না।"
তিনি সিবিআই-এর দিকে তাকিয়ে এই কথাটিও জিজ্ঞাসা করেন, “লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হলে ওই নেতারা গ্রেফতার হবেন, তাই তো?”
সিবিআই অবশ্য এমন সম্ভাবনার কথা অস্বীকার করে। এবং তারপরেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় স্পষ্ট জানান, “আমার অবসর পর্যন্ত অনেকে অপেক্ষা করছে। কিন্তু আমি কখনই অবসরে যাবো না। মাঝে মধ্যে মনে হয় একটা পদযাত্রা করি। হাইকোর্টের নিচে সূর্য সেনের মূর্তি থেকে সুন্দরবন পর্যন্ত। কিছুই বলবো না শুধু হাঁটবো। কী সব চলছে চারিদিকে!”
বিচারপতি রেগে উঠে আরো মন্তব্য করেন, “আদালত কে কাঁচকলা দেখিয়েছে সিবিআই। হাইকোর্টের নজরদারির তদন্ত এমন কেন হবে! এরকম চললে আমাকে সিবিআই বিরুদ্ধে নির্দেশ দিতে হবে।'জোড়াতালি দেওয়া (ভেগ) তদন্ত করছে সিবিআই।মন থেকে বা প্রকৃত (সিনসিয়ারলি)তদন্ত করছে না। মামুলি গোছের তদন্ত হচ্ছে। সিবিআই আধিকারিক আর মানিক ভট্টাচার্যের মধ্যে বোঝাপড়া হয়েছে বলে এখন আমার সন্দেহ হচ্ছে।”
এই প্রসঙ্গে বিচারপতি জানিয়ে দেন, “সুপ্রিম কোর্ট গিয়ে একটা রক্ষাকবচ নিয়ে আসুক মানিক ভট্টাচার্য, আমরা আর কিছু করবো না। হয়তো এমন একটা বোঝাপড়া হয়েছে। এমন সন্দেহই হচ্ছে।“
আগামীকাল দুপুর ১২ টায় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তের সিবিআই তদন্তের কেস ডায়েরিএবং সিডি তলব করেছে হাইকোর্ট।
সিবিআই সুত্রে জানা যাচ্ছে যে গত বছরের ২রা নভেম্বর, ১১ই নভেম্বর, এই বছরের ৬ই ফেব্রুয়ারি, ২৫ ও ২৬-শে জুলাই, মানিক ভট্টাচার্য কে জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিও রেকর্ড আছে। এই ৫ বার জিজ্ঞাসাবাদের বিবৃতি আছে। তবে সই নেই মানিকের। কেস ডায়েরিতে ৫ বার জিজ্ঞাসাবাদের স্টেটমেন্ট নথিভুক্ত করা হয়েছে।
Comments