চাঁদের যে অংশে ল্যান্ডার 'বিক্রম' অবতরণ করেছে তার নাম দেওয়া হয়েছে 'শিবশক্তি পয়েন্ট'। সেখানেই ঘুরে বেড়াচ্ছে রোভার 'প্রজ্ঞান'। চাঁদের দক্ষিণ মেরুর খনিজ ভাণ্ডার ও রহস্যের খোঁজ করতে চলেছে রোভার 'প্রজ্ঞান'। এই 'শিবশক্তি' নামকরণ নিয়ে কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে রাজনৈতিক বিবাদও বাড়ছে। নেটিজেনদের কেউকেউ শিবশক্তির নামকরণের সমালোচনা করছেন। পাল্টা বিজেপি,- চন্দ্রযান ১-এর ভেঙে পড়া স্হানের নামকরন 'জওহর পয়েন্ট' নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।
কংগ্রেস যেমন, আমেরিকা রাশিয়ার দ্বন্দ্বে না ঢুকে জওহরলাল নেহেরুর মহাকাশ গবেষণার স্বপ্ন ও ইসরো নির্মাণের প্রসঙ্গ সামনে আনছে, তেমনি বিজেপির দাবি 'জওহর পয়েন্ট' আসলে গান্ধী পরিবারের দেওয়া পারিবারিক নাম। সেক্ষেত্রে কংগ্রেস মনে করিয়ে দিচ্ছে, - মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র বানানোর সিদ্ধান্তে, নেহেরুর তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন তৎকালীন বিরোধীরা। এই আবহে একটা বিষয় পরিষ্কার, চন্দ্রযান ৩ - এর সফল উৎক্ষেপণ ও ভারতের সফল চন্দ্র-মিশনকে হাতিয়ার করে লাগাতার তৃতীয়বার লোকসভা নির্বাচন জেতার পরিকল্পনা করছে নরেন্দ্র মোদির দল।
বিরোধীদের অভিযোগ, ১৯৬১ সালে শুরু হওয়া ভারতের মহাকাশ গবেষণার সাফল্য অনৈতিক ভাবে নিজেদের বলে চালাতে চাইছে বিজেপি। সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের অভিযোগ - কৃতিত্ব নেবার জন্য বিজেপি চন্দ্র-মিশনের সঙ্গে কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাস জুড়ছে।
দীপঙ্করবাবু মনে করেন, "চন্দ্র-মিশনের পর বিজ্ঞান ইস্যু হলে দেশের জন্য ভাল হতো। এতে ভারতের বিজ্ঞানচেতনা, বিজ্ঞান কেন্দ্রিক মানসিকতা, জ্ঞান-শিক্ষা বাড়তো। যা বিজেপি করছে না। আর তাই, যেদিন চন্দ্র-মিশন সফল হচ্ছে, পরের দিন মুজফফনগরের স্কুলে মুসলমান শিশুকে চিন্হিত করে হিন্দু শিশুদের মারতে বলছেন শিক্ষিকা! যে ঘটনা ভাবা যায় না।"
বিজ্ঞানের সাফল্যের কৃতিত্ব নিতে চাওয়া বিজেপি ও হিন্দুত্ববাদীদের অন্ধবিশ্বাসই - এইসময় ভারতের মূল দ্বন্দ্ব বলে মনে করেন সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক। তাঁর মতে বিজ্ঞানকে ধর্মের সঙ্গে মিশিয়ে জাতীয়তাবাদের মোড়ক চাপানো মোটেই ভাল ব্যাপার নয়।
Commentaires