সোমবার বিশ্বকর্মা পূজোয় ট্রেনের কামরার মধ্যেই রীতিমতো পুরোহিত ডেকে মূর্তি পুজো করা হলো ঢাক-ঢোল, কাঁসর-ঘন্টা বাজিয়ে। পুজোর শেষে যাত্রীদের সবার জন্য প্যাকেটের ব্যবস্থাও ছিল।
নিজেরাই চাঁদা তুলে এই পুজোর ব্যবস্থা করেছেন। প্রত্যেক বছরই এইভাবেই তাঁরা বিশ্বকর্মা পূজো করেন ট্রেনের কামরার মধ্যেই। একটা দিনের পুজো আর এই হৈ-হৈ করে উৎসব পালন যেন তাঁদের সারা বছরের একঘেয়ে দীর্ঘ যাত্রাপথে পরিবর্তনের স্বাদ আনে।
ভোর পাঁচটা চল্লিশে কাটোয়া থেকে ছেড়ে আসে কাটোয়া লোকাল। হাওড়া পৌঁছায় ৮:৪৫ মিনিটে। প্রতিদিন দীর্ঘ ১৪৫ কিলোমিটার একসঙ্গে কাটান। কাটোয়া লোকাল ট্রেনের চার নম্বর কামরার বিশ্বকর্মা পুজোর আয়োজক এই নিত্যযাত্রীরা।
এই নিত্যযাত্রীদের কেউ বা কলকাতা বড় বাজারের কোনো দোকানে স্বল্প-বেতনের হেলপারের কাজ করেন, কেউ আবার সরকারি বড় অফিসার, কেউ সাংবাদিক, কেউবা কলেজ পড়ুয়া।
কিন্তু এই তিন ঘন্টার যাত্রা পথে তাঁদের একটাই পরিচয়। এনারা সবাই নিত্যযাত্রী। খুব ঠাণ্ডার ভোর হোক, বা গরম বা বর্ষা - এই নিত্যযাত্রীদের দিন শুরু হয় এই তিন ঘন্টা একই সঙ্গে। চেনা মুখগুলো
চলন্ত ট্রেনের কামরাতেই মেতে ওঠেন খবরাখবর আদান প্রদানে।
এই তিন ঘন্টায় তারা যেমন নিজেদের সুখ - দুঃখ ভাগ করে নেন, অনেক ভালো গল্প যেমন তৈরি হয় নিজেদের মধ্যে, মাঝে মাঝে ঝগড়াঝাঁটিও যে লাগে না তা নয়।
তবে দিনের শেষে সবার একটাই পরিচয়, তাঁরা সহযাত্রী। বছরের পর বছর এই তিন ঘন্টা তাঁদের একেবারে নিজস্ব। আনন্দে-উৎসবে-দুঃখ-শোকে এনারা একে অপরের শরিক।
Comments