বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ গত ৮ সেপ্টেম্বর মন্তব্য করেন যে সাধারণ মানুষ চাইলে বিজেপি দলকে সমর্থন করতেই পারেন, কিন্তু আরএসএস-এর অনুগামী যেন না হয়। মন্তব্যটি তাৎপর্যপূর্ণ।
রে
তবে সেই মন্তব্যের জবাবে বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায় জেলা পরিষদের সভাধিপতিকেই বিজেপি-তে আসবার আহ্বান করেন। তাঁর কথা অনুযায়ী, “বিজেপি-তে আসুন, সাধুবাদ জানাবো। অন্যকে পরামর্শ না দিয়ে নিজে আসুন।”
অনুব্রত মণ্ডলের অনুপস্থিতিতে কাজল শেখ এখন বীরভূম জেলার তৃণমূল দলের সর্বোচ্চ কর্তা। সেই পদাধিকার বলে তিনি চাইছেন তৃণমূল দলের সমর্থকেরা যেন নিজেদের অবস্থান ঠিক করে নেন। তাৎপর্যপূর্ণ হলো, বিজেপি এবং আরএসএস-এর মধ্যে তিনি ফারাক করতে চাইছেন।
অর্থাৎ, আরএসএস-এর মতো শৃঙ্খলিত একটি প্রতিষ্ঠানে যারা সদস্য হিসেবে রয়েছেন, তাঁরা স্বভাবত বিজেপি দলের মধ্যেই নিজের রাজনৈতিক পরিচিতি খুঁজে পেতে পারেন।
তবে পশ্চিমবঙ্গে কয়েকবছর আগে যতজন আরএসএস-এর সদস্য স্বতঃসিদ্ধভাবে বিজেপি-র সমর্থক হয়ে রাজনীতি করতেন, সেই সংখ্যায় ইদানিং ভাটা পড়েছে।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময় থেকেই লক্ষ্য করা যাচ্ছিল যে, সিপিএম এবং তৃণমূল কংগ্রেস-এর বিক্ষুব্ধ সদস্যরা ভিড় জমাচ্ছেন বিজেপি-তে। এবং পরবর্তীকালেও সেই দলভাঙা মানুষরা বিজেপি-তে প্রত্যক্ষে বা পরোক্ষে সমর্থন জানিয়ে যাচ্ছেন।
এই পরিপ্রেক্ষিতে কাজল শেখের মন্তব্যটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কারণ, কাজল শেখ এবং অন্য জেলার তৃণমূল নেতারা ভালোভাবেই জানেন যে বিজেপি থেকে দল ভাঙিয়ে মানুষজনকে তৃণমূলে ফিরিয়ে আনা কঠিন হবে না।
প্রসঙ্গত, হিরণ চট্টোপাধ্যায় বর্তমান বিজেপি-র পশ্চিমবঙ্গ সেলের দলীয় অবস্থান অনুযায়ী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ‘অশিক্ষিত’ ইত্যাদি নিন্দাসুচক বিশেশ্ন বারবার ব্যবহার করেন তাঁর ভাষণে।
কাজল শেখকে বিজেপিতে যোগদানের আহ্বান জানিয়ে সম্ভবত তিনি ইঙ্গিত দিতে চাইছেন যে অনুব্রত মণ্ডলের মতো কাজল শেখকে তৃণমূলের উর্ধতন নেতা-নেত্রীরা গুরুত্ব দেন না। আদৌ তা সত্যি কি না, তা এখনই স্পষ্ট নয়।
Commentaires