উমার আগমনের আর বেশি দিন নেই কোচবিহারের কুমোরটুলিতে প্রতিমা গড়তে ব্যস্ততা দেখা গেল মৃ্ৎশিল্পীদের। আর হাতে গোনা কটা দিন, তার আগেই প্রতিমা গড়তেই ব্যস্ততা তুঙ্গে মৃৎশিল্পীদের কোচবিহার শহরের পাল পট্টিতে।
আলিপুরদুয়ারে শুধু তাই নয় পার্শ্ববর্তী রাজ্য আসামেও এখান থেকে বহু মূর্তি যেত। এখন সেটা আর দেখা যাচ্ছে না।
মূলত কারণ লকডাউনের পরে বাজার মন্দা হয়ে গেছে পুজো সেভাবে হয়নি সেই একটা কারণ রয়েছে, তারপরে পাশাপাশি পার হয়ে গেল স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে এলেও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি যেভাবে ঘটেছে সেই কারণে প্রতিমা গড়তে গিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
আগে মাটির দাম কম ছিল তাই প্রতিমা বিক্রি করে তাদের দিন চলে যেত।ইতিমধ্যেই মাটির দাম বেড়ে গেছে , বেশি দাম দিয়ে মাটি কিনে আনতে হচ্ছে। বেশি দাম দিয়ে মাটি কিনে এনে সেই অনুযায়ী একটা প্রতিমা গড়ে বিক্রি করতে গেলে সেরকম মজুরিও পাচ্ছে না।
যেই কারিগররা কাজ করছে তাদেরও মজুরি দেওয়া অসম্ভব হয়ে উঠছে। আগে এখান থেকে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ টি প্রতিমা তৈরি করা হতো। বিভিন্ন জায়গায় তাঁদের গড়া প্রতিমাগুলি যেত।
আলিপুরদুয়ার ও পার্শ্ববর্তী রাজ্য আসামেও ইদানিং দেখা যাচ্ছে জিনিসপত্রের দাম বাড়ার কারণে প্রতিমা গড়া কমিয়ে দিয়েছেন মৃৎশিল্পীরা।
এবারে পূজোয় ৩৫টি প্রতিমা গড়ছেন। তারমধ্যে আলিপুরদুয়ারে দুটি প্রতিমা এবং পার্শ্ববর্তী রাজ্য আসামেও একটি প্রতিমা যাচ্ছে। যেখানে আসাম রাজ্যে ১০ থেকে ১২ টা প্রতিমা যেত এবং পার্শ্ববর্তী জেলা আলিপুরে সাত থেকে আটটা প্রতিমা যেত মজুরি না পাওয়ায় সেটা কমিয়ে এনেছেন মৃৎশিল্পীরা।
মৃৎশিল্পী সুজিত পাল বলেন, "সরকারি সুযোগ-সুবিধা আমরা সেরকম ভাবে কোনোভাবে পাইনি। তার পাশাপাশি রাস্তার উপরেই প্রতিমা করে আমাদের এই কাজ করে যেতে হচ্ছে যাতায়াতের সমস্যা হয় সাধারণ মানুষের কিন্তু আমরা কি করব রাস্তার পাশেই প্রতিমা গড়ে এবং বাড়ির মধ্যে করেই এভাবে করেই দিন জীবনযাপন করছি। বৃষ্টি এলেই প্লাস্টিক টাঙিয়ে মূর্তিগুলো ঢেকে রাখা হচ্ছে। যদি আমাদের নির্দিষ্ট একটি জায়গা দেওয়া হতো তাহলে প্রতিমা গড়া আরো ভালোভাবে হতো এবং সমস্যাও হতো না।"
কোচবিহার পৌরসভার থেকে একটি ঘোষণা হয়েছিল যে মৃৎশিল্পীদের জন্য নির্দিষ্ট একটি জায়গা দেওয়া হবে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সেটা কোন কার্যকারী হয়নি। মৃৎশিল্পী সুজিত পালের বক্তব্য, "আমাদের এই শিল্পকলা হারিয়ে যেতে বসেছে যদি সরকার পক্ষ থেকে কিছু সুযোগ-সুবিধা করে দেওয়া হয় তাহলে খুবই উপকার হয়,"
Commenti