রবিবার কলকাতায় ছিল ক্রিকেটের বার। ক্রিকেটের স্বর্গোদ্যানে রূপকথা লিখলেন মেন-ইন ব্লুজ! আর তার যোগ্য সঙ্গত বার্থ-ডে-বয় কোহলির! রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন রাতেই। কলকাতা জুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে জন্মদিনের শুভেচ্ছা ব্যানার।
পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা ভারত খেলবে দ্বিতীয় স্থানে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে ইডেন গার্ডেনে। এটি বিরাট কোহলির দিনও। কারণ আজ তার ৩৬ তম জন্মদিন। 'বার্থডে বয়'-এর খেলা দেখার অপেক্ষায় গোটা কলকাতা।
বিশ্বকাপের ফাইনাল হবে আহমেদাবাদে, কিন্তু কলকাতার ইডেনে ফাইনাল ম্যাচের উত্তাপে প্রভাভিত হয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীও।
রবিবারের সকাল থেকেই কলকাতায় আরেকটি 'পারফরম্যান্স' দেখা গেছে। শহরের বিভিন্ন জায়গায় বিরাটকে জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে হোর্ডিং। বিরাট যে হোটেলে কলকাতায় আছেন তার সামনেও হোর্ডিং লাগানো হয়েছে। ঘুম থেকে উঠেই হয়তো দেখেছেন। না হলেও মাঠের পথেও দেখতে পাবেন। কিন্তু এই হোর্ডিংটি পড়ার আগে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার X (আগের টুইটার) হ্যান্ডেল এবং ফেসবুকে বিরাটকে অভিনন্দন জানান রাত 12টায়।
এই ঘটনাটিকে উদেস্যে বিরোধীরা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী ক্রিকেট নিয়ে রাজনীতি করছেন কি না।
তবে কি মাঠে লড়াই করে উঠে আশা মমতাও, মানুষের কাছে পৌঁছতে সোশ্যাল মিডিয়ার পথে নামছেন! এই কি আগামীর রাজনীতির পথ ?
কোনো ক্ষেত্রেই সেলিব্রিটিদের জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানানো নতুন নয় মমতার। কিন্তু এটা দিনের বেলায় ঘটে। কিন্তু বিরাটের ক্ষেত্রে, মমতা শনি ও রবিবারের সংযোগস্থলে ঠিক রাত 12 টায় পোস্ট করেন।
এ বিষয রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, "এই সময়ে ভারতের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার আমাদের রাজ্যে আছেন। জন্মদিনে তিনি আমাদের শহরে খেলতে আসবেন। ফলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে অভিনন্দন জানানোই সঙ্গত। রাজনীতিকে একপাশে রেখে বিষয়টি দেখা উচিত।
শশীর কথা সত্ত্বেও রাজনীতিকে দূরে রাখতে চায় না বিরোধীরা। অনেকে মনে করেন, শুভেচ্ছা জানিয়ে মমতা আসলে বড় ভক্তদের আকৃষ্ট করার কাজটি করেছেন।
দিলীপও 'সময়ের দাবিতে' একমত। তার দল এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়ে যাচ্ছেন। তবে নির্ভরতা বাড়তে থাকবে বলে বিশ্বাস করেন না দিলীপ। তিনি বলেন, "জনগণ যে পথে চায় রাজনীতিবিদদের সেই পথেই হাঁটতে হবে। ডিজিটাল ইন্ডিয়ার রাজত্বে মানুষের হাতে ফোন। টিভি দেখাও কমছে। তাই রাজনীতিও সেই পথই নিচ্ছে।একই সঙ্গে দিলীপের দাবি, সময় বদলে যায়। এখন যেমন বদলেছে। পরিবর্তন আসবেই।
বিভিন্ন দলের ভিন্ন মত থাকলেও সময়ের দাবি মেনে নিচ্ছেন সবাই। সবয়ং মুখ্যমন্ত্রীও। মঞ্চের সামনে মানুষকে টেনে আনার জন্য তার খ্যাতি তাকে 'জননেত্রী' উপাধি দিয়েছে। তবে তিনি সম্প্রতি জনগণের কাছাকাছি থাকার জন্য সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রশাসনিক সভা পর্যন্ত যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেছেন। প্রশাসনিক সভা বা পুজো উদ্বোধনের ক্ষেত্রেও তাই। বিরাটকে জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানানোও এরই অংশ।
Commentaires