শুক্রবার সকাল ৯টা নাগাদ আচমকাই হাওড়া সেতুতে শুরু হয় অবরোধ। হাওড়া সেতু ধরেই আদিবাসীরা পৌঁছাবে ধর্মতলা। ব্রেবোর্ন রোড ক্রস করেই ধর্মতলা যাচ্ছেন। তার পর রানি রাসমণি রোডে একটি সভা হবে। এর ফলে হাওড়া সেতু থেকে ব্রেবোর্ন রোড পর্যন্ত দীর্ঘ সময় ধরেলাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে বাস ও গাড়ি। জ্যাম ক্রমশ বেড়েই চলছে।
আদিবাসী সংগঠনের মিছিলের জেরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ল হাওড়া সেতু। রাস্তার উপর পতাকা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় আদিবাসী সমাজের প্রতিনিধিদের।তাঁদের দাবি, কুড়মি-মাহাতোরা চাইছেন জোর করে তফসিলি জনজাতির তকমা পেতে। তারা কি রাজনৈতিক মদতও পাচ্ছেন ?
এরই প্রতিবাদে পথে নেমেছে ‘ইউনাইটেড ফোরাম অফ অল আদিবাসী অর্গানাইজেশন্স’। দাঁড়িয়ে রইল সারি সারি যাত্রিবাহী বাস। কতক্ষণ ধরে এই মিছিল চলবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে আন্দোলনকারীরা জানাচ্ছেন, ধর্মতলার উদ্দেশে যাবে এই মিছিল।
এটা ছাড়াও রয়েছে আদিবাসীদের বিরুদ্ধে দমন, পীড়ন এবং উচ্ছেদ বন্ধের দাবি রয়েছে। আদিবাসী সংগঠনের দাবি, তাদের ছাড়া অন্য কাউকে ‘সিডিউল ট্রাইব’-এর মর্যাদা দেওয়া চলবে না এবং নকল এসটি সার্টিফিকেট ইস্যু বন্ধ করতে হবে। ২০০৬ সালের বন্য আইন সারা রাজ্যে চালুর দাবি রয়েছে। এই সকল দাবি নিয়ে শুক্রবার সকালে একটি সভাও রয়েছে তাদের।
তাতে যোগ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন জেলা থেকে হাওড়া স্টেশনে হাজির হয়েছে আদিবাসীরা। সেখান থেকে তাঁরা নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ছেন। বেশির ভাগ মানুষের হাওড়া সেতুর উপর দিয়ে হেঁটে পারাপার হচ্ছেন। এর ফলে দুর্ভোগে পড়েন নিত্যযাত্রীরা। তাঁরা বাস থেকে নেমে পড়তে বাধ্য হন। ক্ষোভ উগরে দেন প্রশাসনের প্রতি।
গাড়ির চাকা বন্ধ হয়েছে। পর পর গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকায় কেউ বিকল্প উপায়েও গন্তব্যে পৌঁছতে পারছেনা। লঞ্চ উঠে বাবুঘাট চত্বরে এসেও বিপদে পড়েছে যাত্রীরা। কারণ অত্যধিক ভিড়ের কারণে লঞ্চ পরিষেবা কিছু সময় বন্ধ রাখতে হয়। পরে লঞ্চে করে মধ্য কলকাতায় পৌঁছেও বাস বা অন্য যানবাহন না থাকায় অসুবিধার মুখে পড়েছেন যাত্রীরা। বেলা গড়াতে ভিড় বাড়তে থাকে মেট্রোতেও। অত্যধিক ভিড়ের কারণে অনেকেই একের পর এক মেট্রো ছাড়তে থাকছে।
এর ফলে বেড়েছে জ্যাম, অসুভিধায় পরেছে সাধারণ মানুষ , ক্রমশ দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের। মানুষের সময় কেটে যাচ্ছে বাসেই তবুও পৌঁছাতে পারছে না অফিসে বা নিজের গন্তব্যে। ক্ষুব্ধ নিত্যযাত্রীদের বক্তব্য, জায়গায়, জায়গায় ট্র্যাফিক মোতায়েন থাকলেও তাঁদের খুব একটা সুভিধা হয়নি।
স্ট্র্যান্ড রোডমুখী রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিকল্প উপায়েও গন্তব্যে পৌঁছতে নাকাল হতে হয় অফিসযাত্রীদের। অনেককে পায়ে হেঁটেই অফিসে পৌঁছনোর চেষ্টা করেন। নিত্যযাত্রীদের এক জনের কথায়, ‘‘কী কারণে এই মিছিল, আমরা জানি না। কিন্তু কাজের সময়ে এ ভাবে হয়রানি হতে হলে খুবই মুশকিল।’’
লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মিনি বাসের এক কন্ডাক্টরেরও দাবি, মিছিল সম্পর্কে তাঁরা অবগত ছিলেন না। তাই সেতুর উপর দীর্ঘ ক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছেন বাস নিয়ে। কখন এই মিছিল শেষ হবে, কখন যেতে পারবেন গাড়ি নিয়ে, কিছুই জানেন না। এই মিছিল বহুবার হয়েছে এবং সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে সাধারণ যাত্রীরা।
Comments