গত ১৯শে সেপ্টেম্বর অভূতপূর্ব ভাবে দেখা গেল কানাডার প্রধানমন্ত্রী ভারতের বিরুদ্ধে বিশ্ববাসীর কাছে অভিযোগ জানাচ্ছেন। তিনি বলছেন ভারত সরকারই নাকি কানাডার এক নাগরিককে হত্যা্র ষড়যন্ত্র করেছে। কী প্রমানের ভিত্তিতে উনি এই কথা বলেছেন তা অবশ্য উনি জানাননি বিশ্বকে।
তবে ভারতের কাছে পোক্ত প্রমাণ আছে যে জুন মাসে মৃত হরদ্বীপ সিং গুজ্জর একজন খলিস্থানি নেতা ছিলেন। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক আতঙ্কবাদীদের যে তালিকা বানিয়েছে তাতে এই গুজ্জরের নাম যথেষ্ট উপরের দিকে ছিল।
আন্তর্জাতিক কুটনীতির সব নিয়ম লঙ্ঘন করে কানাডার প্রধানমন্ত্রী যেভাবে এই অভিযোগে লাগাতার সোচ্চার হচ্ছেন, তা দেখে বিশ্ববাসী বিস্মিত। কানাডার নাগরিক বলেই যে তাঁর দরদ উঠলে উঠছে, এমনটা কিন্তু এই মুহূর্তে আর মনে হচ্ছে না। কারণ, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এবং বিদেশ দপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী একথা স্পষ্ট যে, কানাডা এখন ভারতের কুখ্যাত আতঙ্কবাদীদের সেরা আশ্রয়স্থল।
সম্প্রতি বিবিসি-ও ঘোষণা করেছে যে মৃত হরদীপ সিং গুজ্জর একজন ‘শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী (সেপারেটিস্ট) দলের কর্মী। জানা যাচ্ছে, ২৬ বছর আগে এই নিজ্জর জাল কাগজপত্র নিয়ে কানাডায় পৌঁছে ছিলেন।
নিজ্জরের আগে, সঙ্গে,বা পরবর্তীকালে এমন অনেকেই কানাডায় অভিবাসী হন, যাদেরকে ভারত সরকার ‘আতঙ্কবাদী’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। এই অভিবাসীদের তালিকায় সতিন্দর সিং ওরফে গোল্ডি ব্রার, আর্শদীপ সিং ওরফে আর্শ দাল্লা এবং লাখবীর সিং ওরফে লান্ডা মতো কিছু কুখ্যাত খলিস্থানিদের নাম রয়েছে, যারা ভারতের সুরক্ষার স্বার্থে বিপজ্জনক।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী যেভাবে তাঁর দেশের অভিবাসীদের জন্যে দরদ দেখাচ্ছেন, তাতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে উনি নিজের দেশের মানুষের জনপ্রিয়তা কুড়োতে বেশি উৎসুক। সেই কারণেই ভারতের সুরক্ষার স্বার্থটিকে উনি গৌণ মনে করছেন।
কিন্তু ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কানাডার উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়া যাত্রীদের সতর্ক করে জানানো হয়েছে, “সম্প্রতি ভারতীয় কূটনীতিবিদ এবং ভারতীয় সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষ যারা কানাডার ভারত-বিরোধীতার সমালোচনা করছেন, তাদেকে লক্ষ্যে আক্রমণ চলছে। সেই কারণে আপনাদের উপদেশ দেওয়া হচ্ছে যে জায়গাগুলিতে এই ধরণের কার্যক্রম চলছে ওই দেশে, সেখানে যাওয়া এড়ান।"
এযাবৎ, কানাডার রাষ্ট্রপ্রধান ভারতের বিরুদ্ধে হত্যার প্রমানের কথা বললেও সেই প্রমাণ জনসমক্ষে আনেননি।
উনি কি বুঝতে পারছেন না যাদের প্রতি এত বেশি সমবেদনা দেখিয়ে উনি কূটনৈতিক ভুল করেই চলেছেন, তাঁরা কিন্তু ওনার দেশেও ধ্বংসলীলা শুরু করতে পারেন। নাকি উনি ইতোমধ্যেই এই খলিস্থানি অভিবাসিদের পাতা ফাঁদে পা বাড়িয়ে ফেঁসে গেছেন?
প্রশ্নগুলি এখন সারা বিশ্বের কুটনীতি বিশেষজ্ঞদের মুখে মুখে ঘুরছে।
Комментарии