এবার পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনে পুলিশকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত আজ নির্দেশ দিয়েছেন গত ৫ই সেপ্টেম্বর মেদিনীপুরের খেজুরিতে পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার ঘটনায় যে তিনটি এফআইআর হয়েছে, তার তদন্ত করবে জেলা পুলিশ সুপার।
৫ই সেপ্টেম্বর পঞ্চায়েত সমিতিতে স্থায়ী সমিতি গঠন নিয়ে তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয় খেজুরি-২। জনকায় বিডিওর দফতর লক্ষ্য করে বোমাও ছোড়া হয়। এদিন আহত হন বিডিও নিজে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসতে এলাকায় মোতায়েন করা হয় পুলিশ বাহিনী। এদিন ভোট দিতে আসেন কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী। সেই সময়ে বিডিও অফিসে তৈরি হয় উত্তপ্ত পরিস্থিতি। গণ্ডগোলের জেরে তখনকার মত ভোটপর্ব মুলতুবি রাখতে হয়।
অন্যদিকে, কাঁথি যাওয়ার পথে সাংসদ শিশির অধিকারীর গাড়ি লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয় তেঁতুলতলা বাজার এলাকায়। সুষ্ঠু ভাবে বোর্ড গঠন সম্পন্ন করার জন্য তাই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন জনৈক খুকুমণি মণ্ডল সহ বেশ কয়েক জন। আজ ছিল মামলার শুনানি।
রাজ্যের তরফ থেকে ইতিমধ্যেই সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়, সেদিন অশান্তির জেরে বোর্ড গঠন সম্ভব হয়নি। আদালতের প্রশ্ন, বোর্ড গঠনের দিন নজরদারিতে কত জন পুলিশ ছিল? রাজ্যের উত্তর মোটামুটি ২৫০ জন।
বিচারপতির পর্যবেক্ষণ এত পুলিশ মোতায়নের পরেও যদি গণ্ডগোল ঠেকানো না যায় তাহলে তা দুর্ভাগ্যজনক। রাজ্যের তরফে বলা হয়, বিডিও অফিসের বাইরে পুলিশবাহিনী মোতায়েন ছিল। কিন্তু ভোট চলাকালীন বিডিও অফিসের ভিতরে গন্ডগোল হয়। সেক্ষেত্রে পুলিশের কিছু করার ছিল না।
এই প্রসঙ্গে পাল্টা আদালতের প্রশ্ন, ‘‘কী ভাবে এমন একটা ঘটনা লঘু করে দেখছে পুলিশ! বোমাবাজি হয়েছে। তাতে প্রাণহানি ঘটার আশঙ্কা ছিল।
উল্লেখ্য, রাজ্যের তরফ থেকে জানানো হয় ওই দিনের ঘটনায় মোট ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দায়ের হয়েছে দু’টি এফআইআর। সাংসদের গাড়িতে হামলার ঘটনায় আরো একটি এফআইআর দায়ের হয়েছে।
এরপরই হাইকোর্টের নির্দেশ, খেজুরিতে পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনের সময় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করতে হবে। প্রয়োজনে ভোট প্রক্রিয়া চলাকালীন কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নিতে হবে। সদস্যদের নিরাপত্তার দায়িত্ব বর্তাবে পুলিশের উপর।
পাশাপাশি, যে এফআইআর-গুলির তদন্ত করবেন পুলিশ সুপার নিজে। বোর্ড গঠন হবে জেলাশাসকের দফতরে। যদিও বোর্ড গঠনের দিন ধার্য হয়নি এখনও।
Comments