দেশজুড়ে সিএএ লাগু নিয়ে মার্কিন প্রশাসনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করল মোদী সরকার। একইসঙ্গে জানিয়ে দিল, সিএএর ব্যাপারে মার্কিন প্রশাসনের অভিযোগ সম্পূর্ণ, ‘ভুল এবং অযৌক্তিক’। এর আগে বৃহস্পতিবারই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল, তারা ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন লাগুর বিজ্ঞপ্তি ঘিরে উদ্বিগ্ন। আর, এই সংশোধিত আইনের বাস্তবায়ন মার্কিন প্রশাসন মনোযোগ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করছে।
আর, এরপরই নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন (সিএএ)-এর ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্য সম্পর্কে ‘ভুল, ভুল তথ্যে ভরা এবং অযৌক্তিক’-এর মত বাছাবাছা বিশেষণ ব্যবহার করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। একইসঙ্গে শুক্রবার প্রতিক্রিয়ায় ভারত বলেছে যে, সিএএ আইন ভারতের ঐতিহ্য, মানবাধিকারের মত দীর্ঘস্থায়ী প্রতিশ্রুতিকে মাথায় রেখেই লাগু করা হয়েছে। আর, তাছাড়া এই আইন তৈরি একেবারে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এর সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনও ব্যাপারই নেই।
এই ব্যাপারে এক সাংবাদিক বৈঠকে বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘আপনারা যেমনটা জানেন যে, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন-২০১৯ ভারতের একটি অভ্যন্তরীণ বিষয়। আর, এটি ভারতের ঐতিহ্য এবং মানবাধিকারের প্রতি ভারত সরকারের দীর্ঘস্থায়ী প্রতিশ্রুতি মেনেই লাগু করা হয়েছে।’
একইসঙ্গে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, সিএএ আইনটি নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য লাগু করা হয়েছে। নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার জন্য লাগু করা হয়নি। এই ব্যাপারে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, ‘এই আইনটি আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, পার্সি এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের একটি নিরাপদ আশ্রয় দেওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে। সেই সব আশ্রয়প্রার্থীদের কথা মাথায় রেখে এই আইন তৈরি করা হয়েছে, যাঁরা ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর বা তারও আগে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন।’
সিএএ বাস্তবায়নের বিষয়ে মার্কিন বিদেশ দফতরের বিবৃতি সম্পর্কে জয়সওয়াল বলেছেন, ‘আমরা মনে করি যে এই বিবৃতি ভুল, ভুল তথ্যে ভরা এবং অযৌক্তিক। ভারতের সংবিধান তার সকল নাগরিকের ধর্মীয় স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেয়। সংখ্যালঘুদের প্রতি কোনও উদ্বেগজনক আচরণের ঘটনা এদেশে নেই। ভোটব্যাংকের রাজনীতির দ্বারা পরিচালিত হয়ে দুর্দশাগ্রস্তদের সাহায্য করার জন্য তৈরি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ সম্পর্কে এমন মতামত দেওয়া উচিত না।’
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র আরও বলেন, ‘ভারতের বহুত্ববাদী ঐতিহ্য, এই অঞ্চলের বিভাজন-পরবর্তী ইতিহাস সম্পর্কে যাঁদের তেমন ধারণাই নেই, তাঁদের এমন কথা বলার চেষ্টা না করাই ভালো। ভারতের অংশীদার এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের উচিত যে উদ্দেশ্য নিয়ে এই পদক্ষেপ (সিএএ) নেওয়া হয়েছে, তাকে স্বাগত জানানো।’
Comments