top of page

বিজেপি এখন ‘জওয়ান’ শাহরুখ খানকেই আশ্রয় করেছে


বাজারে জিনিসপত্র তো সবাই পরখ করেই কেনেন, এবার নির্বাচনে তাহলে পরখ করে প্রার্থীদের ভোট দিন। ‘জওয়ান’ ছবিতে চরিত্রের বাইরে এসে শাহরুখ খান সরাসরি দর্শকদের সামনে নিজের ‘মন কি বাত’ বললেন।


আশ্চর্যের ব্যাপার, গত এক সপ্তাহ ধরে বিজেপি-র কুখ্যাত আইটি সেল ঘাপটি মেরে বসে ছিল। টুঁ শব্দটি শোনা যায়নি তাদের অতি-সক্রিয় এক্স (টুইটার) হ্যান্ডেলগুলিতে বা অন্য সমাজ মাধ্যমে। পরিস্থিতি যে একেবারেই তাদের পিতৃসম দলের সপক্ষে যাচ্ছে না, তা বুঝে এবার মাঠে নেমেছে এই ‘কৃত্রিমবুদ্ধি’-নির্ভর ট্রোলবাহিনী।


আক্রমণটি এবার ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শাহরুখ খানের দিকে বিজেপি সমর্থকেরা এখন কাদা ছিটোচ্ছে না। বরং, শাহরুখ খানকে ঢাল বানিয়েই তাদের ‘চিন্তা চৌবাচ্চা’ কংগ্রেস এবং বিজেপি-বিরোধী জোটের দিকে এলোমেলো তীর ছুঁড়ছে।


যেমন, ধরা যাক বিজেপি-র এক জাতীয় মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া বলেই ফেললেন যে ‘জওয়ান’ ছবির মাধ্যমে শাহরুখ খান আসলে ২০০৪ থেকে ২০১৪ অবধি ইউপিএ সরকারেরই সমালোচনা করলেন। ছবির কিছু সংলাপ আউড়ে নিজের ‘সুচিন্তিত’ মতামত প্রকাশ করলেন তিনি, “গান্ধী পরিবারের জন্যে কথাগুলো সুপ্রযুক্ত।“ গৌরব ভাটিয়া-র মতো মুখেতেই মারিতং জগৎ তত্ত্বে আদৌ বিশ্বাসী নয় বিজেপি-র কুখ্যাত আইটি সেল।


মধ্যপ্রদেশে আসন্ন বিধানসভার জন্যে ফিল্ডিং করতে নেমেই তারা ‘জওয়ান’ ছবিতে ব্যান্ডেজ বাঁধা শাহরুখ খানের মুখের বদলে মধ্যপ্রদেশের ভূপাল শহরের কংগ্রেস নেতা কমল নাথের মুখটা বসিয়ে পোষ্টার ছেপে দেওয়ালে দেওয়ালে সেঁটে বাজারে নেমেছে। পোস্টারটির নিচে লেখা “কোরাপশন কি হায়েওয়ান (শয়তান)!”


এই পোষ্টার প্রচারের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে পুলিসে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে। কংগ্রেস মুখপাত্র আব্বাস হাফিজ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে কমলনাথের এমন অপমান, সাধারণ মানুষ একেবারেই সহ্য করবে না।


কংগ্রেস নেতা কমলনাথ নীতিপরায়ণ কি না, তা এখানে প্রাসঙ্গিক নয়। প্রাসঙ্গিক হলো, হিন্দু ধর্মের ধ্বজাধারীরা যে ব্যক্তিগত আক্রমণে বরাবর বিরোধীদের বিদ্ধ করে এসেছে গত সাত-আট বছর ধরে, তা ক্রমশ প্রকট হচ্ছে আসন্ন নির্বাচনগুলিতে।


যেমন, মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের ‘সুশাসন’-কে তুলে ধরবার মতো উপাদান তাদের হাতে এখন আর নেই। বিশেষ করে ‘ব্যাপম’ কেলেঙ্কারির পরে বিজেপি-র পক্ষ থেকে শিক্ষা, কর্মসংস্থান, উন্নয়ন ইত্যাদি নিয়ে প্রচার করতে যথেষ্ট উদ্বেগ এবং অস্বস্তি রয়েছে, তা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।


সুতরাং ধর্ম, জাতি, বিদ্বেষের জটিল অঙ্ক কষে নির্বাচন সাগর পার করতে হবে তাদের। এবং হাওয়া গরম বুঝলে দাঙ্গা ঘটিয়ে সমাজকে মেরুকরণের উপরেই জোর দেবে তারা। কারণ, বিজেপি-র মতো কোনো রাজনৈতিক দলই ভালো জানে না বা বোঝে না যে ভোটারদের মধ্যে বিভাজন ঘটিয়েই জিত হাসিল করতে হয়।

Comments


bottom of page