পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনপ্রিয় প্রকল্প ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ নিয়ে কয়েকটি ঘটনায় নড়েচড়ে বসছে প্রশাসন। এমন ঘটনা যে আগে ঘটেনি, তা নয়। তবে স্ত্রীদের নামে প্রতি মাসে জমা পড়া টাকা আসে। সেই টাকা কেড়ে বা চুরি করে স্বামীদের নেশা করার ঘটনা এবার সামনে এল।
নদীয়া সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা শ্রেয়সী। তাঁর ছেলে সপ্তম শ্রেণীর পড়ুয়া। গৃহশিক্ষকের মাসের মাইনে দেবেন বলে তিনি সকাল বেলা থেকে ব্যাঙ্কে লাইন দিয়ে লক্ষীর ভাণ্ডার প্রকল্পের ৩ মাসের টাকা তুলে এনেছিলেন।
এরপর বাড়ি ফিরে সেই টাকা বিছানায় রেখে স্নানে যান। স্নান সেরে ঘরে ঢুকে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো ৪০ বছরের শ্রেয়সী রায়ের। বিছানায় সব দিক খুঁজেও টাকাগুলো না পাওয়ায় তিনি বুঝতে পারেন টাকা গুলো কে সরিয়েছে।
সন্ধ্যাবেলায় শ্রেয়সীর স্বামী রমেশ রায় বাড়ি ফেরেন। ঘরে ঢুকেই পুরুষপুঙ্গব জানিয়ে দেয় টাকাটা সেই চুরি করেছে। হেরোইনের নেশা না জুটলে সে মাথা ঠিক রাখতে পারেনা।
ঘরে ঘরে একই ঘটনা ঘটে চলেছে। নদিয়ার সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে এই মাদকের নেশা যে সংক্রমণের মতো ছড়িয়ে পড়েছে, তা এই ঘটনাগুলি থেকেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
কৃষ্ণগঞ্জ, ভীমপুর, চাপড়া, পলাশিপাড়া, কালীগঞ্জ, বেতাই, করিমপুর থানা এলাকায় মাদকাসক্তি যে প্রবল আকার ধারণ করেছে, তা নিয়ে জেলার গোয়েন্দা দফতরের একটি রিপোর্টে এ উদ্বেগও প্রকাশিত হয়েছে।
সীমান্ত এলাকায় ৩০০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে পুরিয়ার আকারে মিলছে হেরোইন। নির্দিষ্ট জায়গায় নির্দিষ্ট সময়ে বাইকে করে আসছেন মাদক কারবারীরা। পুলিশ এবং গ্রাম রক্ষা কমিটির নজরদারি এড়ানোর জন্য প্রতি দিন বদল হচ্ছে ঠেক।
সেই ঠেকগুলিতেই স্বামীরা জড়ো হচ্ছে নেশার টাকা নিয়ে। সেই খরচ সামলাতে তারা তাদের স্ত্রীদের জমানো লক্ষীর ভাণ্ডারের টাকা চুরি করতে বিন্দুমাত্র ইতস্তত বোধ করছে না। নেশার টাকা জোগাড় করতে স্ত্রীর পাওয়া লক্ষীর ভাণ্ডারের পয়সা লুট করছেন স্বামীরা। তাই নিয়ে বাড়ছে দাম্পত্য কলহ, অশান্তি ছড়াচ্ছে একের পর এক পরিবারে।
Comments