রবিবার রাতেই, রাজধানী পৌঁছে আবারো হুঁশিয়ারি অভিষেকের। বললেন, যদি পারেন তাহলে আটকান। এর আগেও তৃণমূল সাংসদ এই একই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছিলেন তার এক্স হ্যান্ডেলে। রবিবার রাতে দিল্লি পৌঁছে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও একবার বললেন, "আবারও বলছি যদি পারেন আমাকে আটকান"। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, "কোন তদন্তকারী সংস্থাকেই চ্যালেঞ্জ করছেন না তিনি"। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায়, ইডির জিজ্ঞাসাবাদের চিঠি পেয়ে নিজের এক্স-হ্যান্ডেলেও অভিষেক লিখে ছিলেন, "স্টপ মি ইফ ইউ ক্যান"। সেই সময়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছিলেন, তাহলে কি তৃণমূল সাংসদ, দলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে চ্যালেঞ্জ করছেন? দিল্লি পৌছে সম্ভবত তারই জবাব দিলেন অভিষেক।
অভিষেক জানিয়েছেন, "বাংলা কেন্দ্রীয় বঞ্চনার যারা শিকার। ১০০দিনের মজুরি আটকে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। যারা ১০০দিনের কাজ করেও মজুরি পাননি তাঁদের নিয়েই দিল্লি এসেছি আমি। রাজ্যের বকেয়া আদায় করতে। আমি তাদের নতুন সংসদ ভবন দেখিয়ে আনব। যাতে তাঁরা বুঝতে পারেন, কিভাবে তাদের হকের টাকায় নতুন সংসদ ভবন তৈরি হয়েছে। একটা সংসদ ভবন থাকতে বাংলার মানুষের অধিকার থেকে তাদের বঞ্চিত করে আরও একটি বিশাল সংসদ ভবন তৈরি করা হয়েছে।"
দুদিনের কর্মসূচি শুরু হওয়ার আগে, আজ সোমবার রাজঘাটে গান্ধীজীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে। রবিবার রাতেই একথা জানিয়ে তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রাজঘাটে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর, দলের দু'দিনের কর্মসূচীর সূচনা হবে। এদিকে ২রা অক্টোবর, গান্ধী জয়ন্তীর দিনে, ব্যস্ততা থাকবে রাজঘাটে। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজঘাটে শ্রদ্ধা জানাতে যাওয়ার কথা। আসবেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা। সকালে ভিভিআইপিদের শ্রদ্ধা নিবেদনের পরই বেলা দেড়টায় রাজঘাটে শ্রদ্ধা জানাতে জাবেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল। তারপরেই মূল আন্দোলনের কর্মসূচী। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, "দলের মূল লক্ষ্য ১০০ দিনের কাজের বকেয়া আদায়। ১০০ দিনের কাজ, যাকে মনরেগা বলে তার সঙ্গে গান্ধীজীর নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। সেই কারণেই গান্ধীজীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে শুরু হবে কর্মসূচী।"
মঙ্গলবারের কর্মসূচি নিয়ে রবিবার রাতের বৈঠকে কোনও আলোচনা হয়নি। তৃণমূলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ বলেন, "সোমবার দুপুরের বৈঠকে চূড়ান্ত হবে, মঙ্গলবারের কর্মসূচি। ঐ বৈঠকের পরই দলনেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানাবেন।" কুনাল জানিয়েছেন, মঙ্গলবারই দিল্লির যন্তর মন্তরে দলের কর্মসূচির জন্য দিল্লি পুলিশের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। সেই অনুমতি অবশেষে পাওয়া গেছে। কিন্তু দিল্লির রামলীলা ময়দানে বিক্ষোভ-অবস্থানের পরিকল্পনা ছিল তৃণমূল নেতৃত্বের। দিল্লি পুলিশ অনুমতি দেয়নি।
তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি ভয় পেয়ে, দলের দিল্লি চলো কর্মসূচিকে বাধা দিতে চাইছে। রাজ্যের শাসক দলের অভিযোগ, প্রথমে ট্রেন বাতিল, পরে ফ্লাইট বাতিল, পরে দিল্লিগামী বাস বিজেপি শাসিত উত্তর প্রদেশে আটকে দেওয়া হয়। এদিকে, তৃণমূল সূত্রে খবর, একাধিক বাস ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশে ঢুকে পড়েছে। সোমবার সকালের মধ্যেই সেগুলির দিল্লি পৌঁছে যাওয়ার কথা। দিল্লির পাহাড়গঞ্জ রোড, চিত্তরঞ্জন পার্ক, দিল্লি কালীবাড়ি সংলগ্ন এলাকার অতিথিশালা এবং পান্থনিবাসগুলিতে বাসযাত্রীদের থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে।
রুচিকা
Comments